My_Mafia_Boss পর্ব-৪৮

0
4831

My_Mafia_Boss পর্ব-৪৮
Writer: Tabassum Riana

ফোন রেখে লম্বা শ্বাস নিলো রুহী।কাল কি হবে কি জানে?ভাবতেই চিন্তিত হয়ে পড়ে রুহী।যাবে কি যাবেনস বুঝতে পারছেনা।রোয়েন জানলে ও কষ্ট পাবে।কিন্তু মাকে মেরেছে সেটার?ভাবতে পারছেনা কিছু রুহী।বিছানায় শুয়ে চোখ বুজে শুয়ে আছে রুহী।কলিংবেলের শব্দে চোখ খুলে রুহী।দৌড়ে নিচে এসে দরজা খুলে দিলো।রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে।রুহী জড়িয়ে নিলো রোয়েনকে।রোয়েন ও জড়িয়ে ধরে তার মায়াবতীকে বুকের সাথে।রুহী সরে আসে। উপরে যান আপনার ডিনার রেডি করছি। মাথা নিচু করে বলল রুহী।রুহীর হাত টেনে ধরলো রোয়েন।আমার সাথে আসো।ডিনার রেডি করার জন্য সার্ভেন্ট আছে।গম্ভীর কন্ঠে বলল রোয়েন। রুহীর হাত ধরে সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।রুহী রুমে এসে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে।ওর পুরো শরীর কাঁপছে।কারণ টা বুঝতে পারছেনা রুহী নিজেই। রোয়েন মুখ ধুয়ে বিছানায় এসে বসলো। রুহীর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে ও।এনি প্রবলেম??? রাগী গলায় বলে উঠলো রোয়েন।মাথা নাড়ালো রুহী।তো ঐখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?ধমক দিয়ে উঠে রোয়েন।কাছে আসো আবার ও ধমক দিয়ে উঠে রোয়েন।রুহী এবার কাঁপা কাঁপা পায়ে রোয়েন কাছে গিয়ে বসলো।রুহীর দু কাঁধ ধরে ওর দিকে ফিরালো রোয়েন।কি হয়েছে বলো?গম্ভীর কন্ঠে প্রশ্ন করলো রোয়েন। রুহী মাথা নিচু করে আছে।রুহী কি হয়েছে বলো রুহীকে ঝাঁকিয়ে বলল রোয়েন।না ম মম মানে ……. স্যার ডিনার রেডি কাজের লোকটি দরজার কাছে এসে বলল।কাজের লোকটির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে রুহীর দিকে চোখ রাঙ্গালো রোয়েন।দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো পরে এসে শুনবো। খেয়েছো? রুহীকে প্রশ্ন করলো রোয়েন। ডান বাম দিকে মাথা নাড়ায় রুহী।রুহীর হাত ধরে নিচে চলে আসে রোয়েন।খাওয়ার টেবিলে ও রুহী খেতে পারছিলোনা।কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারছেনা ও।রোয়েন রুহীর দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।কি চলছে রুহীর ভিতর কে জানে?
খাবার শেষে রুমে চলে এলো ওরা।রোয়েন রুহীকে খাটে এনে বসিয়ে দিলো।এখন বলো কি হয়েছে?
আ আমার না ভা ভা ভালো লাগছেনা।রোয়েন চিন্তিত হয়ে পড়লো।রুহীর গালে কপালে হাত দিয়ে দেখতে লাগলো।বডি টেম্পারেচার তো ঠিক আছে ভ্রু কুঁচকে বলল রোয়েন।না মানে মাথাটা ব্যাথা করছে।রোয়েন রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।ঘুমা ও তাহলে ভালো লাগবে বলে রুহীর কপালে চুমু দিয়ে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে নিলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে মাথা তুলে তাকালো।কাল ওনার সম্মতি ছাড়া রুহান আসলামের সাথে দেখা করবে ও।জানতে পারলে কি করবেন ওনি কে জানে?ভাবতে থাকে রুহী।সকাল ভোরে উঠে গেছে রুহী।রোয়েন এখন ও গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে।রুহী ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে হাঁটছে।হঠাৎ টেবিলে আপেলের বাটিতে ছুড়িটার দিকে নজর পড়ে রুহীর।রুহী ছুড়িটার দিকে ধীর পায়ে আগাতে থাকে।ছুড়িটা খপ করে হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে থাকে।শাড়ীর ভিতর ছুড়িটা নিয়ে সিড়ির দিকে আগাতে থাকে।

রোয়েন ঘুম থেকে উঠে মায়াবতী কে দেখতে পায়। ওর দিকে তাকিয়ে আছে রুহী।রোয়েন রুহীর হাত ধরে রুহীকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরে রোয়েন।রুহীর চোখ বড় বড় হয়ে যায়।কিছুক্ষন পর ছাড়তেই রুহী ধড়ফড় করে উঠতে যেয়ে আবার ও রোয়েনের ওপর পড়ে।কি সরতে ইচ্ছে হচ্ছেনা?বলে মুচকি হাসে রোয়েন।রুহী উঠে দাঁড়ায়, আরে না না।মাথা নিচু করে দাঁড়ায়।রোয়েন বাঁকা হাসি দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। রুহীকে পাস করে রোয়েন তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।রুহী হালকা হেসে আলমারির দিকে হাত বাড়ালো রুহী।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে রুহীর হাতে তোয়ালে ধরিয়ে দিলো।রুহী আগের মতো রোয়েনের চুল মুছে দিলো।রোয়েনের চুল মুছে উঠে দাঁড়ায় রুহী।রোয়েন উঠে দাঁড়িয়ে রুহীর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো রেডি হয়ে নাও স্কুলে যেতে হবে।রোয়েন বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।রুহী রেডি হয়ে নিচে নেমে এলো।রোয়েন নাস্তার জন্য বসে আছে টেবিলে।রুহী পাশে এসে বসলো। রোয়েন ফলের বাটিতে হাতিয়ে কি যেন খুঁজছে।আমিল!!!! ছুড়ি কই ফল কাঁটার?চিৎকার করে বলতে লাগলো রোয়েন।আমিল দৌড়ে এলো স্যার এখানেই তো ছিলো কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলল আমিল।এখন নেই চোখ রাঙ্গিয়ে বলল রোয়েন।ছুড়িটা ভেঙ্গে গেছে।নতুন একটা রেখে দিবো আজ এক নাগাড়ে বলে ফেলল রুহী।হুহ, রোয়েন আপেলে কামড় বসালো।নাস্তা সেড়ে রুহী কে নিয়ে স্কুলের জন্য রওনা হলো রোয়েন।রুহীর বুক ধুকপুক করছে।কি করতে যাচ্ছে ও? কপাল ঘামছে রুহীর।স্কুলের সামনে এসে গাড়ি থামালো রোয়েন।গাড়ি থেকে নেমে রুহীর পাশের দরজা খুলে দিলো রোয়েন।রুহী বসে কি যেন ভাবছে।রোয়েন রুহীর কাছে এলো রুহী নামো। গম্ভীর কন্ঠে বলল রোয়েন।রোয়েনের কথায় ঘোর ভাঙ্গে রুহীর জ জি নামছি।রুহী নেমে একটু সামনে এসে আবার পিছনে গিয়ে রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ায়। কি হলো? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
রুহী কিছু না বলে রোয়েনের বুকে মাথা রাখে।রুহীর চোখের কোনা বেয়ে এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।
রুহী আমরা রাস্তায়। রাগী গলায় বলে উঠলো রোয়েন।
রুহী দ্রুত চোখ মুছে সরে এসে সামনে ফিরে হাঁটতে লাগলো।
রোয়েন অবাক চোখে রুহীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।কি হয়েছে ওর মায়াবতীর।এমন দেখাচ্ছে কেন ওকে?রুহী পিছনে ফিরে তাকায়। রোয়েনের চোখে চোখ পড়তেই সামনে তাকায় রুহী।রুহীর ভিজে যাওয়া চোখ দুটো রোয়েনের চোখ এড়ালো না।রোয়েন বুকে চিনচিনে ব্যাথা অনূভব করছে।রুহীর চোখের পানির কারনটা কি?রোয়েন গাড়িতে ঢুকতে নিয়ে আবার সামনে ফিরে রুহীর দিকে তাকায়।স্কুল গেটে ঢু্কে পড়েছে ওর মায়াবতী।রোয়েন গাড়িতে ঢুকে বসে গাড়ি চালিয়ে দিলো।রুহী গেট দিয়ে মাথা বের করে।রোয়েনের গাড়ি দেখা যাচ্ছেনা।রুহী আশেপাশে তাকিয়ে বের হয়ে আসে গেটের ভিতর থেকে।ক্যাফের দিকে আগায় রুহী।ক্যাফের একটি টেবিলে বসে পড়ে রুহী।ক্যাফের ওয়েটারদের মধ্যে তিনজন রোয়েনের দলের লোক।ম্যানেজার ও রুহীর রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করবে রোয়েনের কথা মতো।টেবিলের ওপর দুহাত রাখলো রুহী।রুমে ঢুকতেই রোয়েনের ফোন বেজে উঠে।পকেট থেকে ফোন বেরে রোয়েন।ওরই দলের একজন লোক কল করছে।ফোন রিসিভ কানে রাখে রোয়েন।ঐ পাশ থেকে লোকটি বলে উঠেস্যার ভাবি ক্যাফেতে এসেছে।মনে হচ্ছে কারোর অপেক্ষা করছে।রোয়েন ভ্রু কুঁচকায় কি বলছো এসব?ওকে স্কুলে দিয়ে এসেছি।স্যার ভাবি এখানে।রোয়েন ফোন কেঁটে বেরিয়ে পড়ে।রুহান আসলাম রুহীর সামনে এসে বসে।কেমন আছিস মা? হালকা হেসে প্রশ্ন করলো রুহান আসলাম।দাঁত কটমট করে রুহী বলে উঠে যা বলার বলে ফেলুন।আরে মামনি এতো জলদি কেন করছিস?কিছু খাবি?খেতে আসিনি এখানে।আর আপনার টাকায় কিছু খাওয়ার রুচি ও আমার নাই আর না কখনো হবে।রাগী গলায় বলল রুহী।তো রোয়েন কে কবে ছাড়ছিস তুই পায়ে পা উঠিয়ে বলে উঠলো রুহান আসলাম।কেন ওকে ছাড়বো বাবার দিকে একটু এগিয়ে এসে বলল রুহী।কারন ও ভালোনা।তোর জন্য ও সুবিধার না।এক নাগাড়ে বলল রুহান আসলাম।আপনি খুব ভালো আর সবাই খারাপ তাইনা?আমার মাকে মেরে ও আপনি খুব ভালো? ভ্রু কুঁচকালো রুহী।কি বলছিস আমি কেন তোর মাকে মারবো?রোয়েন কুকুরটা তোর মাথায় এসব ঢুকিয়েছে না?দাঁতে দাঁত চেপে বলল রুহান।আমার বরের সম্পর্কে আরো একটা বাজে কথা বললে চিন্তা করতে পারবেননা কি করবো আমি।রাগী গলায় বলল রুহী।কি করবে তুমি?রুহান আসলাম শয়তানি হাসি দিলো।তাছাড়া তোমার মাকে মেরেছি সেটা ভুলে যাও।এটা সত্যি না।একদমে বলল রুহান আসলাম।ঐদিন রোয়েনের সাথে কথা বলার সময় শুনেছিলাম।এখন বলুন কি সত্য আর কি মিথ্যা?ওহ শুনে ফেলেছো?তাহলে ভালো হলো।এখন আরো সোজা হবে রোয়েন শেষ করতে।আগে তুমি মরবে তারপর তোমার পেয়ারে বর।রুহী চেয়ারে হেলান দিয়ে বলল বাহ এত্ত কনফিডেন্স? আপনি মাকেই না রোয়েনকে ও মারতে চেয়েছিলেন, শুধু ওকেই না ওর মা বোনকে ও আপনিই মেরেছেন।হুম মেরেছি এবার সবাইকে মারবো কাউকেই ছাঁড়বোনা চিৎকার করে বলতে লাগলো রুহান আসলাম।বেঁচে থাকলেই না মারবেন।হা হা কি করবে তুমি?কি করার ক্ষমতা আছে তোমার বলেই দাঁত কেলিয়ে হাসলেন রুহান আসলাম।রুহী উঠে দাঁড়ালো রুহান আসলামের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে।হাহ যা তোর ক্যারেক্টারলেস বরের কাছে যা আরে যানা।বলেই হাসতে লাগলো রুহান। রুহীর আর সহ্য হলোনা। ছুড়ি রুহান আসলামের বুকে এলোপাথাড়ি চালাতে লাগলো।লোকটা চিৎকার করার ও সময় পেলোনা।রুহী পাগলের মতো ছুড়ি চালাচ্ছে।ক্যাফের বাকি কাস্টমারেরা সবাই চলে গেছে দৌড়ে।রোয়েন গাড়ি থেকে নেমে ক্যাফের দিকে দৌড় দেয়।রুহী!!!!!বলে চিৎকার করে উঠে রোয়েন। রুহী যেন কিছু শুনছেইনা।রুহান আসলামের রক্তাক্ত বুককে আরো রক্তাক্ত করেছে ও।ওর মুখ জামা সবজায়গায় ছিটাছিটা রক্তের দাগ গুলো নৃশংস হত্যা কান্ডের পরিচয় দিচ্ছে।রোয়েন দৌড়ে এসে রুহীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।থামো রুহী সে আর নেই।রুহীর কানে কথা ঢুকছেইনা।Stop it damn it.He is no more চিৎকার করে উঠে রোয়েন।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে