Love At 1St Sight Season 3 Part – 19

0
5297

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 19

writer-Jubaida Sobti

গান শেষ করতেই চোখ থেকে ঝরঝর করে পানি ছুটছে স্নেহার….ফুফিয়ে কেঁদে গিটারটা হাত থেকে নামিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো….

মার্জান, শায়লা, জারিফা স্নেহার কান্না দেখে তিনজনই ভেতরে এগিয়ে আসে…

মার্জান : [ স্নেহার কাধে হাত রেখে ] যখন দূরে থাকতে পারবিনা তাহলে ফিরিয়ে দিলি কেনো?…

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেঁদে উঠে…] ও চলে গেছে!

জারিফা : [ স্নেহার পাশে বসে ] এখনো সময় আছে স্নেহা! কিছুই বদলাইনি…

[ স্নেহা কেঁদেই চলছে ]

মার্জান : যাহ! স্নেহা গিয়ে বলেদে!

[ স্নেহা চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে গিটারটি চেয়ারের উপর রেখে…সোজা দৌড় দিলো… চোখ এইদিকে মুছছে তো এইদিকে আবার জলে ভিজিয়ে দিচ্ছে…দৌড়াতে দৌড়াতে চুল গুলো এলোমেমেলো হয়ে যাচ্ছে স্নেহার…এদিকওদিক তাকিয়ে ছুটছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে মনে মনে ] “What have you done to me rahul! যখনি তোমার কাছে আসি “I always try to go far away from you…” but [ চোখ মুছে ] যখনি তোমার থেকে দূরে যায় ! I always feel to come near you! [ কেঁদে উঠে ] now! I don’t need anything else rahul! I don’t need anything!

_________________________________

এইদিকে,

রাহুল গাড়ীতে উঠে বসলো, ড্রাইভিং সি্টে বসেই ভাবছে স্নেহার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো কি অদ্ভুত ছিলো এই কটাদিন!…

মনটা ছটফট করছে স্নেহার কাছে ছুটে যাবে বলে তারউপর আজ স্নেহার গান শুনেতো আবার নতুন করে প্রেমে পড়ে গেলো তার,
ইচ্ছে হচ্ছে দৌড়ে গিয়ে ঝড়িয়ে ধরবে একটু ,..কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব সে তো স্নেহাকে কথা দিয়েছে..একবার reason বললে এরপর আর তার চেহেরা ও দেখাবে না স্নেহাকে!

রাহুল : [ একটু হেসে মনে মনে ] স্নেহা তুমি আমার পাশে থাকো অথবা দূরে, these distance! can never weaken our relationship! because, we could hear each other, feel each other, can even talk with each other, [ বলেই চোখটা বন্ধ করে একটা জোড়ে শাস নিলো ]
_________________________________

স্নেহা রাহুলকে খুঁজতে খুঁজতে দৌড়ে ভার্সেটি বারান্দা পেড়িয়ে শিরি দিয়ে নামতেই যাচ্ছিলো হঠাৎ, ব্যালেন্স হারিয়ে..পড়েই যেতে নিলো.. কিন্তু পড়লো না, নিমিষেই কেউ তাকে ধরে আটকিয়ে ফেলেছে,..

স্নেহা এক্সাইটেড হয়ে রাহুল বলে তাড়াতাড়ি ফিরে তাকালো…

সামির : হেইই স্নেহা! কেয়ারফুল! এতো তাড়াহুড়ো করে কোথায় যাচ্ছো…

স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] আপনি?..

সামির : ইয়াহ ইটস্ মি! [ অবাক হয়ে ] আরে! What happen স্নেহা?..তোমার চোখে পানি কেনো?…

স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে সামির থেকে দূরে সরে দাঁড়ালো,

সামির : ইউ ওকে স্নেহা?…

স্নেহা : কিছুনা…কিক..কিছুনা…[ বলেই তাড়াহুড়ো করে দৌড় দিয়ে নেমে চলে গেলো ]

সামির : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! আরে কি হয়েছে সেটা তো বলো?…

[ স্নেহা কেঁদে চোখ মুছতে মুছতে দৌড়ে রাহুলের ক্লাসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো…ক্লাস চলছে স্নেহা জানালা দিয়ে এদিকওদিক তাকিয়ে খুঁজছে রাহুলকে…রাহুল ক্লাসে নেই দেখে…স্নেহা মন খারাপ করে চলে যাচ্ছিলো..]

হঠাৎ পেছন থেকে,

আসিফ : [ ক্লাস থেকে বেড়িয়ে এসে ] স্নেহা!

স্নেহা : [ তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে আসিফের দিক এগিয়ে এসে ] আ..আপনি..রাহুলকে…

আসিফ : রাহুল কিছুক্ষণ আগেই বেড়িয়েছে….

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] চলে গেছে?..[ বলেই পেছাতে লাগলো ]

আসিফ : স্নেহা!

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে দৌড়ে পার্কিং এর দিক গেলো এবং সাথে সাথেই চোখে পড়লো… রাহুলের গাড়ি বেড়িয়ে যাচ্ছে গেইট দিয়ে ]

স্নেহা : [ চিৎকার করে ] রাহুল!…

– রাহুল ওয়েট!

[ বেড়িয়ে গেলো রাহুলের গাড়ী… স্নেহা চিৎকার করে করে দৌড়ে গিয়ে ও নাগাল পেলো না রাহুলকে…]

কান্নায় ভেঙে পড়ে স্নেহা!
হাটু ভেংগে মাটিতে বসে পড়লো…ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে চলছে,

হঠাৎ,আশেপাশের কয়েকজন তাকিয়ে আছে…দেখে স্নেহা চোখ মুছে…ধীরেধীরে উঠে দাঁড়ালো, সামনের দিক পা বাড়িয়ে সে ও বেড়িয়ে পড়ে ভার্সেটি থেকে,
_________________________________

এইদিকে,

জারিফা : কি করছেনটা কি হাত ছাড়েন প্লিজ!

রিদোয়ান : [ একটু হেসে ] ছেড়ে দেবো! আগে প্রমিস্ করো…আসবা কি আসবা না…

জারিফা : আপনি পাগল হয়েছেন?..প্রমিস্ কেনো করবো?…প্লিজ ছাড়ুন আমার স্নেহাকে খুঁজতে হবে!

রিদোয়ান : Don’t worry জারিফা! স্নেহা! রাহুলের সাথেই হবে! ওদের কিছুক্ষণ Time spend করতে দাও… [ জারিফাকে কাছে টেনে নিয়ে ] And now তুমি আমার question এর Answer দাও!
_________________________________

এইদিকে, নিচ তলায়, মার্জান স্নেহাকে খুঁজতে এসে…হঠাৎ আসিফকে দেখে দৌড়ে এগিয়ে যায়,

মার্জান : শুনেন শুনেন! আপনি স্নেহা আর রাহুলকে কোথাও দেখেছেন?…

আসিফ : [ মার্জানকে দেখে অবাক হয়ে ] হ্যা! দেখেছি!

মার্জান : কোথায়?..কোথায় গিয়েছে ওরা?…

আসিফ : তোমাকে কেনো বলবো?..

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] আমি কি আপনার সাথে মজা করছি?…

আসিফ : Don’t know!

মার্জান : [ মুখের সামনে আঙুল তুলে ] Listen! I am serious! [ চেঁচিয়ে ] not kidding!

[ আসিফ মার্জানের একটু কাছে এগিয়ে এসে তার আঙুল দিয়ে মার্জানের আংগুলটি মুখের সামনে থেকে নামিয়ে দেই মার্জান পিছিয়ে যায় ]

আসিফ : ঠিকাছে বলছি এক শর্তে!

মার্জান : শর্তে?.. কিক কি শর্তে?…

আসিফ : ঐদিন ধাক্ষা লেগেছিলো…তুমি আমাকে সরি বলোনি…তাই আজ বলবে?..

মার্জান : [ রেগে চেঁচিয়ে ] What?…are you mad?..দেখেন…এমনিতে অনেক টেনশনে আছি! So.. কথা না বাড়িয়ে সোজাসোজি বলুন ওরা কোথায়?…

আসিফ : Excuse me! আমিতো কথা বাড়াচ্ছিনা…সরি বলো! আমিও বলছি!

[ মার্জান রেগে আসিফের গলার সামনে হাত দুটো নিয়ে মুচড়া মুচড়ি করছে…যেন পারছে না তাকে এক্ষুনি গলা চেপে মেরে ফেলতে…]

আসিফ : [ হেসে হেসে ] আরে বাপরে এভাবে তো কাপড় মোচড়াতে দেখেছি! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]

মার্জান : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে চোখ বন্ধ করে চেঁচিয়ে বলে উঠে ] ওকে! সরি!

আসিফ : [ থেমে গিয়ে পেছনে ফিরে এসে মার্জানের সামনে এসে দাঁড়ায় ] কিছু বলেছো?..

মার্জান : [ রাগান্বিতভাবে দাত কিলিয়ে ] I say sorry!

আসিফ : [ মুচকি হেসে ] হুম এখন শুনলাম!

মার্জান : চুপচাপ স্নেহা আর রাহুল কোথায় বলে আমার চোখের সামনে থেকে দাফা হয়ে যান!

আসিফ : [ কনফিউজড হয়ে ] ইয়াহ! আমি..রাহুলকে এদিকদিয়ে হেটে বেড়িয়ে যেতে দেখেছি….উমম [ চিন্তা করতে করতে ] স্নেহা! রাইট?..ওহ হ্যা স্নেহা ও এদিক দিয়ে কোথাও গিয়েছে হবে…

আচ্ছা! আমার লেইট হচ্ছে ওকে বাই হুম! [ বলেই চলে গেছে, মার্জান রাগান্বিত চোখে হা করেই চেয়ে আছে আসিফের চলে যাওয়া যেন তাকে চোখ দিয়েই গিলে খেয়ে ফেলবে! ]

হঠাৎ,

শায়লা : [ দৌড়ে এসে ] আরে মার্জান পেয়েছিস কাউকে?…

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] এই Idiot নিজেকে নিজে কি ভাবে বলতো?…

শায়লা : [ কনফিউজড হয়ে ] Idiot কোন idiot?…

মার্জান : [ কাদো কন্ঠে ] ও আমাকে বোকা বানিয়ে সরি বলিয়ে গেছে…

শায়লা : you mean! ঐ ছেলেটা?..

মার্জান : [ রাগান্বিতভাবে নাকফুলিয়ে হাটতে হাটতে ] ওকে তো আমি এমন শাস্তি দিবো…আর কোনো শাস্তি পাওয়ার আগেই যেনো আমার শাস্তিটাই ওর মনে পড়ে! ইডিয়ট একটা! ইচ্ছে করছে…

শায়লা : ওকে রিলেক্স মার্জান!সামান্য সরিই তো!

মার্জান : সামান্য মানে?…[ রেগে ] তুত…তুই চুপ করে থাক আমার মাথা এমনিতে খারাপ হয়ে আছে!

শায়লা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা বাবা! এইবার বল স্নেহার খবর পেয়েছিস?..

মার্জান : আরে ওর খবর নিতে গিয়েই তো শয়তানটা আমাকে বোকা বানিয়ে চলে গিয়েছে!

শায়লা : [ অবাক হয়ে ] আচ্ছা!
_________________________________

ভার্সেটি ছুটি, সবাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে,

মার্জান,শায়লা,জারিফা, তিনজনই গার্ডেনের গাছতলায় বসে আছে,

জারিফা : রাহুল ও ভার্সেটি নেই! নিশ্চয় স্নেহা রাহুলের সাথেই কোথাও বেড়িয়েছে I am sure!

শায়লা : আরে! কিন্তু রাহুল আর স্নেহা তো.. I mean ওদের মাঝে যে প্রবলেমটা হয়েছে ওটা তো Solve হয়নি! ওরা দুজন একসাথে কি করে যাবে?…

জারিফা : আরে স্নেহা হল থেকে বেড়িয়েছিলো রাহুলের কাছেই যাবে বলে, [ চোখ মেরে ] So I think এতোক্ষণে ওদের প্রবলেম Solve হয়ে রোমেন্স সহ শুরু হয়ে গিয়েছে নিশ্চয়!

মার্জান : কিন্তু স্নেহা ফোন কেনো সুইচ অফ করে দিয়েছে?…

জারিফা : আরে রাহুল ও তো সুইচ অফ করে দিয়েছে.. তারমানে হচ্ছে ওরা দুজন চাচ্ছে না..যে এই টাইমে ওদের কেউ ডিস্টার্ব করুক!

মার্জান : এক সেকেন্ড! তুই কি করে জানলি যে রাহুল ও সুইচ অফ করে দিয়েছে?..

জারিফা : [ ঢোক গিলে ] আব..আ..মানে….

মার্জান : [ জারিফাকে চিমটি দিয়ে ] কি আব আব করছিস?..

জারিফা : আআও!

মার্জান : আরে বলনা কি করে জানলি!

জারিফা : ও…ওর ফ্রেন্ড রিদ..রিদোয়ান ফোন করেছিলো.. আমার সামনে তখন দেখেছি! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে যায় ]

শায়লা : [ জারিফাকে একটু ধাক্ষিয়ে চোখ মেরে ] ওহো!..ওর ফ্রেন্ড আর তোর কি?…

জারিফা : সর তো! আমার কি হতে যাবে কেনো…আমি তো স্নেহাকে খুঁজতে গিয়েছিলাম হঠাৎ!

মার্জান : জারিফা! মাই ডিয়ার!…আমরা বাচ্চা না ওকে!

জারিফা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] হ্যা! ঠিকাছে তোরা বাচ্চা না তোরা আমার দাদী আম্মা! এবার চল বাসায়…

শায়লা : কিন্তু স্নেহা!

জারিফা : আরে বললাম না স্নেহা..রাহুলের সাথেই হবে…আর ও ভার্সেটি ছুটির টাইমিং তো জানে…আসলে বাসায় ওই আসবে!

মার্জান : [ উঠে দাঁড়িয়ে ] ওকে চল তাহলে!
_________________________________

সন্ধ্যা নেমে এলো… স্নেহা ব্রীজের ধারে বসে আছে…সূর্য ডুবে যাচ্ছে…নদীর পানি বয়ে…চলছে আর স্নেহা এক ধ্যানে চেয়ে আছে…চোখ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে…

ভেবে যাচ্ছে রাহুলের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো!
_________________________________

এইদিকে,

মার্জান : সন্ধ্যা পেড়িয়ে যাচ্ছে…এখনো বাসায় আসেনি মেয়েটা! একবার মোবাইল অন করে অন্তত একটা..কলতো দিতে পারে তাইনা?..

জারিফা : [ মুখে হাত দিয়ে ব্লাশিং হয়ে ] উফফ! স্নেহা রাহুলকে আই লাভ ইউ টু! কিভাবে বলেছে যদি একটু দেখতে পারতাম না!

মার্জান : [ জারিফার মাথায় বারি দিয়ে ] তুই আছিস তোর বেকার চিন্তা নিয়ে!

শায়লা : [ পাশের রুম থেকে দৌড়ে এগিয়ে এসে ] গাইস্ আমার আর্জেন্ট বেরুতে হবে…[ বলেই আলমারি খুলে তার কাপড়চোপড় গোছাতে লাগলো ]

মার্জান, আর জারিফা অবাক হয়ে খাট থেকে নেমে দাড়ায়!

জারিফা : কোথায় যাচ্ছিস?..

মার্জান : আর্জেন্ট বেরুতে হবে মানে?..

শায়লা : বাবার অবস্থা খুব সিরিয়াস হসপিটাল এডমিট করেছে! তাই!

মার্জান : ওহ গড! এগেইন!

জারিফা : কিন্তু আংকেল তো সুস্থই ছিলো দু-দিন আগে তোর সাথে ভালো ভালোই কথা বলেছে..

শায়লা : Don’t know হঠাৎ করেই!

মার্জান : কিন্তু তুই একা যেতে পারবি?..আমরা কেউ যায় তোর সাথে…

শায়লা : Don’t worry আমি যেতে পারবো! তোরা এইখানেই থাক…স্নেহা যে কোনো মুহূর্তেই আসতে পারে…ও এসে কাউকে না দেখলে তখন টেনশনে পড়ে যাবে!

জারিফা : [ শায়লাকে ঝড়িয়ে কাদো কাদো ভাবে ] মেরি জান! তাড়াতাড়ি চলে আসিস প্লিজ! গতবার গিয়েছিলি..১মাসের আগে ফিরিসনি…

মার্জান : [ ও ঝড়িয়ে তাদের সাথে জয়েন করে ] ইয়েস্ মাই ডিয়ার! আর আমাদের জানাস খবরাখবর!

শায়লা : [ একটু হেসে ] ওকে ওকে!

জারিফা : বাই! সাবধানে যাস!

মার্জান : পৌছে ফোন দিস কিন্তু!

শায়লা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই ব্যাগ গুছিয়ে সব ঠিকটাক করে দরজা বেধে চলে গেলো ]
_________________________________

মার্জান : [ শায়লাকে বিদায় দিয়ে রুমে এসে মোবাইল হাতে নিয়ে খাটে বসলো ] ইয়ার! জারিফা…রাত হয়ে গেছে….এখনো স্নেহার কোনো খবর পাইনি! আমার খুব টেনশন হচ্ছে!

জারিফা : আরে তুই! উফফ আবার টেনশন করছিস কেনো?..চলে আসবে ও…[ চোখ মেরে ] এখন হয়তো রাহুলের সাথে বিজি আছে… উম উম!

[ মার্জান আর কোনো জবাব না দিয়ে চুপচাপ বসে রইলো, ]

কিছুক্ষণ পর হঠাৎ,দরজায় বেল বেজে উঠলো,

জারিফা : এই নে! বেল বাজছে..স্নেহাই হবে! [ বলতেই দুজন একসাথে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললো ]

মার্জান : স্নেহা! [ বলেই এক্সাইটেড হয়ে ঝড়িয়ে ধরে ] ওহ গড! কি চিন্তা হচ্ছিলো তোর জন্য!

জারিফা : আরে আগে ওকে ভেতরে তো আসতে দে!

মার্জান : ওহ হ্যা! হ্যা! [ বলেই স্নেহার হাত ধরে ভেতরে ঢুকালো, ভেতরে ঢুকতেই স্নেহার কাধ থেকে ব্যাগটা ছুটে মাটিতে পড়ে গেলো ]

হঠাৎ, জারিফা আর মার্জান দুজনই একসাথে খেয়াল করলো,

স্নেহার নাক, চোখ, মুখ সবই লাল হয়ে আছে…তাদের সামনে যেনো এক সাদা মূর্তি দাড় করিয়ে রেখেছে!

মার্জান : [ শকড হয়ে ] স্নেহা! কি হয়েছে?…

জারিফা : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] You ok স্নেহা?…

স্নেহা চমকে উঠে তাদের দুজনের দিক একবার একবার তাকিয়ে কোনো জবাব না দিয়ে ভেতরের রুমে গিয়ে খাটে বসে পড়ে….
মার্জান আর জারিফা ও অবাক হয়ে পেছন পেছন এগিয়ে গিয়ে স্নেহার পাশে এসে বসে,

মার্জান : স্নেহা! দেখা হয়েছে রাহুলের সাথে?..

জারিফা : স্নেহা! কোথায় ছিলি এতোক্ষণ ?..বলেছিলি রাহুলকে?…

[ স্নেহা মূর্তির মতো হয়ে বসে আছে চোখে পানি এসে জমে গেছে পলক ফেলতেই গড়িয়ে পড়বে পানি! ]

মার্জান : আরে স্নেহা! কি হয়েছে কিছুতো বল?..এভাবে মূর্তির মতো হয়ে আছিস কেনো?…

স্নেহা : ও..চলে গেছে…মার্জান! [ বলেই কেঁদে উঠে ]

মার্জান : কে চলে গেছে? রাহুল?..

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো ]

জারিফা : তার মানে রাহুলের সাথে তোর কথা হয়নি?..

[ স্নেহা মুখ বুজে কাঁদতে কাঁদতে মাথা নাড়ালো! ]

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] তাহলে এতোক্ষণ কোথায় ছিলি?..

স্নেহা : দূরে কোথাও…যেখানে কেউ ছিলো না… [ বলেই চোখ মুছে ধীরেধীরে উঠে দাঁড়িয়ে বারান্দার দিক চলে গেলো ]

জারিফা ও উঠে এগিয়ে যেতে চাইলে,

মার্জান : [ জারিফাকে হাত ধরে আটফিয়ে ফেলে ] থাক যাসনে! ওকে কিছুক্ষণ একা থাকতে দে!

স্নেহা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিক তাকিয়ে আছে… কিছুই দেখা যাচ্ছে না…ঘুটঘুটে অন্ধকার আর চারদিক কুয়াশায় ভর্তি…রাহুলের কথা মনে পড়তেই চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে….
_________________________________

এইদিকে..রাহুল রুফ-টপের একটি চেয়ারে তার দাদীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে..দাদী মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে….

দাদী : জীবনে অনেক বাধা আসবে রাহুল! সব কিছু সাহসের সাথে লড়ে যেতে হবে! ভেংগে পড়লে সব শেষ!
আর তুই তো আমার স্ট্রং বয়!

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] দাদী! আমিতো স্ট্রং বয়! কখনো ভেংগে পড়িনি! তাহলে স্নেহার সময় কেনো এমন হচ্ছে?…ওর থেকে দূর হয়ে এমন লাগছে যেন পুরো পৃথিবীটাই থেমে গেছে…সব অগোছালো লাগছে…এমন কেনো হচ্ছে?..

দাদী : [ একটু হেসে ] কারণ তুই স্নেহাকে মন থেকে ভালোবাসিস….
আর যাকে একবার মন থেকে ভালোবাসা হয় তাকে ভুলা সহজ না…

রাহুল : [ ফুফিয়ে কেঁদে ] দাদী! I can’t live without sneha!

দাদী : সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো হারে না রাহুল! স্নেহাও যদি তোকে ভালোবাসে তাহলে সে অবশ্যই তোর কাছে আসবে!….

যেমন তোর বাবা-মা কে দেখ! ওদের দেখে মনে হয় ওরা একজন আরেকজনকে ভালোবাসে? কতোবারই তো দুজনের কাছে ডিভোর্স পেপার পাঠানো হয়েছে…তোর মা বলে ওকে আগে সাইন করে দিতে বলো..আবার তোর বাবা বলে, না ওকে আগে সাইন করে দিতে বলো! [ একটু হেসে, ] এটাই হচ্ছে… ভালোবাসা!

স্নেহা অনেকটাই সরল! একদম তোর মায়ের মতো! ওকে নেহা যা বলেছে..তা বুঝে নিয়েছে..যদি ওর ভালোবাসা ও সত্যি হয়! তাহলে ও নেহাকে বিশাস করবে না…ওর ভালোবাসা কি বলে সেটাই বিশাস করবে!

[ রাহুলকে নাড়িয়ে দিয়ে ] হয়েছে এবার ভেতরে আয়…খাবার খেতে!

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] আমার খিধে নেই দাদী! স্নেহা ও হয়তো কিছু খায়নি এতোক্ষণে!

দাদী : না খেয়ে থাকলে সব সমাধান হবে না রাহুল!…এতোক্ষণ কি বুঝিয়েছি?..হুম?…

রাহুল : [ মাথা তুলে উঠে বসে ] সত্যি দাদী! একদমি খিধে নেই! trust me!

দাদী : সব বুঝি আমি! খাবার রুমের টেবিলে রেখে যাবো… যখনি খিধে লাগবে খেয়েনিস! [ বলেই রাহুলের মাথা কাছে টেনে কপালে একটি চুমু খেলো ] গুড নাইট!

রাহুল : মাথা নাড়িয়ে! গুড নাইট [ দাদী চলে গেলো ]

রাহুল চেয়ারে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে,
আকাশের দিক চেয়ে আছে…আর মনে মনে ভাবছে…

জীবনটা কি অদ্ভুত যাঁদেরই আপন করে নিতে চাই! তারাই সবসময় তাকে একা করে দিয়ে চলে যায়,

একা তো আগেও ছিলাম…জীবনটা..একাত্তিতে এই রাতের আকাশের মতোই অন্ধকার ছিলো! হঠাৎ.. করেই এই অন্ধকার রাতের আকাশের বুকে..স্নেহা চাঁদনির আলোর মতো হয়ে এসে উকি দেই…তখন মুহূর্তটা এমন মনে হয়েছিলো…যেন চারদিক শুধু আলো আর আলো…

আর এখন স্নেহা চলে গেছে…চারদিক শুধু অন্ধকার আর অন্ধকারই মনে হচ্ছে…. [ একটু হেসে উঠে…বেয়ারের বোতোলটা হাতে এগিয়ে নিলো আর বলতে লাগলো ]

জীবনটা আসলেই বড় অদ্ভুত!

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে