contract_marriage★  part: 18

0
3814
contract_marriage★
part: 18
writer-Jubaida Sobti
নিলা : কি দেখছেন হা করে। আর আপনি যান এইখান থেকে… মামা দেখলে রেগে যাবে।
আবির : ঠিকাছে ডাকো তোমার মামাকে আমি ও দেখি অনি কতো রাগতে পারে।
নিলা : ঠিকাছে বসে থাকেন আমি গেলাম।
আবির নিলার হাত ধরে ফেললো…
নিলা : (রেগে আবিরের দিকে ফিরে..).
হাত ছাড়ুন আমার। কোন অধিকারে আমার হাত ধরেছেন।
আবির : (ভয় মুখে) ওকে রিলেক্স…
নিলা কি হয়েছে তোমার.. তুমি আমার সাথে এমন কেনো করছো..
নিলা : ডিভোর্স পেপার পেয়ে যাবেন কয়েকদিনের মধ্যে সাইন করে দিবেন।
আবির : (অবাক চোখে নিলার দিকে চেয়ে) নিলা r u sure….?
নিলা : Excuse me..! এইখানে শিউর হওয়ার কি আছে হুম… এটাইতো নিয়ম ছিলো তাই না কন্ট্রাক্ট পেপারে।যখন আমি রুলস ফলো করিনি তখন তো দুনিয়াকে তুলে বসিয়েছেন। আর এখন যখন ফলো করছি তাতে আপনার সমস্যা হচ্ছে।
আবির : নিলা তখন পজিশন অন্যরকম ছিলো… আসলে আমি বুঝতে পারিনি।
আর…
নিলা : আর কি…….????
আবির : আর কিছু না…. এখন কি যাবা নাকি না…
নিলা : (মনেমনে যতোদিন মুখ ফুটে নিজের মুখে বলবেন না… আমিও আর যাবো না।?
এটাই আমার ডিসিশন। আমি আর ঐ খাট সোফা শেয়ার করে থাকার জীবন কাটাতে পারবো না আমাকে নিজের বউ মেনে নিয়ে গেলে যাবো আর নয়তো যাবো না। ) এক কথা বার বার বলতে ভালো লাগে না আবির।?
আবির রেগে গিয়ে দরজা খুলে সবার সামনে থেকে বেরিয়ে যায়।
মামা : নিলা! ও এইখানে কিভাবে ঢুকেছে? আমি না বারন করেছি আবিরের সাথে কথা না বলার জন্য।
আমি একবার নষ্ট করেছি তোর জীবন আর করতে চায় না।
নিলা কেঁদে রুমে ঢুকে পড়ে।
আবিরের মাথায় কিছুই আসছে না
কি করবে…
একটা রেষ্টুরেন্টে গিয়ে কফি খেতে বসলো…
হঠাৎ নিলার সাথে কাটানো দিন গুলো মনে পরছে আর আবির নিজে নিজে হাসছে।
হঠাৎ আবিরের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো…
ভাবছে নিলার বাসায় চুরি করে গেলে কেমন হয়।
কিন্তু কেমনি যাবে ঐখানে ও তো আরেক হিটলার আছে…
আরে যা হবে দেখা যাবে আমি কি অন্য কাউকে নিতে যাচ্ছি আমিতো আমার বউ কে নিতে যাচ্ছি। (মনে মনে একটু হেসে উঠে) আমার বউ? Yeah right nila is my wife…… হা হা হা…
আবির : (নিলার বাসার সামনে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে কেউকে দেখতে পায়না।
রাত প্রাই দুটো বাজে। বাসায় ও যায়নি
ক্ষিদে ও পেয়েছে।)
(মনে মনে তারার সাথে প্রেম করতে এতো কষ্ট হয়নি যতোটুকু না নিজের বউয়ের সাথে করতে কষ্ট হচ্ছে।)
আবির শ্রেয়ার ফোনে কল দিলো…কিন্তু রিসিভ করছে না।
শ্রেয়া আর নিলা একসাথে ঘুমিয়েছে।শ্রেয়া ঘুম চোখে আবির কল দিয়েছে দেখে ফোনটা নিলাকে ধরিয়ে দেই।
নিলা ও ঘুম চোখে ফোনটা ধরে
নিলা : হ্যালো…
আবির : ( দাবানো কন্ঠে) হ্যালো শ্রেয়া আমি আবির।
নিলা : (হঠাৎ লাফিয়ে উঠে বসে…) আবির!! আপনি?? এতো রাতে ফোন দিলেন কেনো?
আবির : (খুশি হয়ে) ওহ! নিলা তুমি ভালো হয়েছে তুমিই রিসিভ করেছো। নিলা আমি তোমাদের বাড়ির পিছনে দরজার ঐদিকে আছি। তুমি একটু আসো…
নিলা : ( অবাক হয়ে) কি!! আপনি কি বাংলা সিনেমার নায়িকা পাইছেন আমাকে হে?
আবির : আরে ধুর… বাংলা সিনেমার নায়িকা হতে যাবা কেনো…. আসো না প্লিজ…. প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ…
নিলা : আচ্ছা হয়েছে…আসছি।
নিলা আস্তে আস্তে দরজা খুললো..
আবির নিলাকে দেখে খুব খুশী হয়ে যায়।?
নিলা : কি হয়েছে দাত বত্রিশ টা একসাথে এভাবে দেখায় রাখলেন কেনো..?
আবির : নিলা! তুমি কিন্তু বেশী ভাব নিচ্ছো.. বুঝেছো…?
নিলা : আর এতো রাতে চোরের মতো এইখানে কেনো এসেছেন..
আবির : নিলা আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
নিলা : ( উত্তরের দৃষ্টিতে চেয়ে) হে বলেন।
আবির : (অনেক্ষন ট্রাই করে বলার জন্য কিন্তু সাহস পাচ্ছে না।)…. আচ্ছা তুমি ডিনার করেছো..?
নিলা : এটা বলার জন্য এতো রাতে এইখানে ঢেকেছেন।?
আবির : হে কেনো এটা কি জিজ্ঞেস করা যায়।
নিলা : (বিরক্ত বোধ করে) আবির! আপনি এখন যান আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে।
এই বলে নিলা দরজা বন্ধ করে দেই।
আবির ও মন খারাপ করে চলে যায়।
অনেক কষ্টে ভাবীকে মেনেজ করে বাসায় ঢুকে রুমে যায়।
সকাল হলে আবিরের বাবা জিজ্ঞেস করে আবির বাসায় এসেছে নাকি।
আবিরের মা বলে.
মা : বাসায় আসবে না তো কোথায় যাবে… এটা ওর ও বাসা।
বাবা : এভাবে করে করেইতো ওকে মাথায় তুলে ফেলেছো…
সকালে উঠে আবির ফ্রেশ হয়ে তার ভাবির কাছে যায়।ভাবি রান্নাঘরে নাস্তা বানাচ্ছে।
আবির : (দুষ্টুমির ভংগিতে) ভাবি ডিয়ার হাই…..
ভাবি : আবির! তুই আজ এতো তাড়াতাড়ি।
আবির : ভাবি ডিয়ার আমার কি ঘুম হচ্ছে তুমি বলো…
ভাবি : হে তাই তো এভাবে… বিয়েটা করেছিস শয়তান ।
আবির : আরে ভাবি… তখন পজিশন একরকম ছিলো… আমি বুঝিনি।
ভাবী : কিন্তু আমিতো তোকে বুঝিয়ে ছিলাম তাই না।
আবির : উফফ ভাবি রাখো তো এখন তোমার একটা হেল্প লাগবে…আমার।
ভাবী : দেখ আমি আর তোর এসব কিছুতে পড়তে চাই না।
আবির : ভাবী ডিয়ার… তুমি এটা বলতে পারলা…
ভাবী : আচ্ছা বল কি করতে হবে।
আবির : ভাবী! তুমি নিলাকে ফোন দিয়ে বলবা যে আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছি।আমাকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হচ্ছে।
ভাবী : (রেগে গিয়ে) আবির! তুই কিন্তু অভার করে ফেলছিস।
আবির : ভাবী! ভাবী! ভাবী! আমি বললে ও বিশাস করবে না তুমি বললে করবে তাই…. কিছু হবে না এটাই একটা চান্স। নিলাকে বাসায় আনার।
ভাবী প্লিজ প্লিজ প্লিজ… প্লিজজজ….
ভাবী : আচ্ছা ঠিকাছে।
ভাবী ফোন দিলো নিলাকে।
নিলা: হ্যালো…
ভাবী : নিলা প্লিজ তুমি বাসায় একটু আসতে পারবা তাড়াতাড়ি।
নিলা : কি হয়েছে ভাবী? বাসায় কিছু হয়েছে।
ভাবী : নিলা! আবির খুব অসুস্থ সে তোমাকে ছাড়া হসপিটাল যাচ্ছে না…
নিলা : কি! হসপিটাল কি হয়েছে ওনার… আমি আসছি ভাবী….
ভাবী : নিলা! এতো প্রশ্ন না করে তাড়াতাড়ি এসো প্লিজ।
এই বলে ভাবী ফোন কেটে দিলো…
নিলা কিসের উপরে বাসা থেকে বের হলো
সে নিজে ও জানে না।
এদিকে আবির নিলার অপেক্ষায় বসে আছে। প্রায় দু ঘন্টা হয়ে গেলো নিলা এখনো আসেনি।
আবির : (ভাবছে) কি বেপার নিলার তো এতোক্ষনে এসে যাওয়ার কথা। তার মধ্যে আমি অসুস্থ বলেছি তাহলেতো আরো আগে আসার কথা।
ভাবী আবিরের রুমে আসে আবিরকে চা দিতে..
ভাবী : কি বেপার আবির নিলা এখনো আসেনি যে… ফোনে কথা বলে তো এমন লেগেছে যেমনকি সে উড়ে আসতে পারছে না।
তবে এতো লেট হচ্ছে কেনো…
আবির : (চিন্তিত মুখে) হে ভাবী আমি ও তা ভাবছি।
ভাবী : আবির নিলাকে এভাবে ডাকাটা ঠিক হয়নি বোধ হয়।
একবার ফোন দিয়ে দেখবি।
আবির : না ভাবী! আর কিছুক্ষন দেখি হয়তো ট্রাফিকে আটকে পড়েছে।
হঠাৎ ভাবীর ফোন বেজে উঠলো..নিলার ফোন দেখে ভাবী তাড়াতাড়ি রিসিভ…করে
কিন্তু ফোনে হ্যালো যে বললো সেটা নিলার কন্ঠ নয় একটা ছেলে লোকের কন্ঠ।
ভাবী : হ্যালো আপনি কে…এটাতো নিলার নাম্বার।
আবির ভাবীর থেকে ফোনটা কেরে নিয়ে
আবির : হ্যালো… কে আপনি?
জি! এটা আমার নাম্বার না। এইখানে একটা মেয়ে এক্সিডেন্ট হয়েছে।এটা তার ফোন। লাস্ট কল যার ছিলো তাকেই ফোন দিয়েছি।
আবিরের কলিজাটা মোচোর দিয়ে উঠলো….শরীর কাপা শুরু করলো…
ভাবী : আবির কি হয়েছে…
আবির ফোনের মানুষটা থেকে কোন জায়গায় আছে ওটা জেনে তাড়াতাড়ি দৌড় দিলো….
ভাবী : আরে আবির কোথায় যাচ্ছিস… কি হয়েছে…
আবির : (কাদো কাদো ভাবে) ভাবী নিলার এক্সিডেন্ট হয়েছে।তুমি বাসায় এখন কিছু বলিওনা আমি ঐখানে গিয়ে ফোন করে জানাচ্ছি।
ভাবী মুখ দিয়ে কিছু বলার আর সময় পায়নি আবির খুব তাড়াহুড়ো করে চলে গেলো…
ভাবীর ও খুব টেনশন হচ্ছে আবিরতো এটা চায়নি।এটা কেনো হলো…
আবির গিয়ে দেখে নিলাকে তারা একটা চায়ের দোকানের বেঞ্চের উপর শুয়ে রেখেছে।
আবির তাদের উপর খুব রেগে যায়…
আবির : ওনাকে কেউ হসপিটাল নিয়ে যায়নি কেনো…
একজন লোক বলে উঠে…
দেখেন আমরা উনাকে অনেক জোড় করেছি অনি হসপিটাল নিয়ে যেতে দেইনি। শুধু বলছে উনাকে নাকি একটা টেক্সি ঠিক করে দিতাম অনি নাকি ওনার হাজবেন্ডের কাছে যাবে…
আবির তাড়াতাড়ি নিলার কাছে গিয়ে…
আবির: নিলা তুমি কি পাগল… হসপিটাল যাওনি কেনো…
নিলা কিছু বলতে পারছে না…নিলার মাথার পিছনে আর পায়ে আঘাত পেয়েছে। চেহেরা দেখে বুঝা যাচ্ছে মাথা থেকে ব্লাড বের হওয়ায় কিছুক্ষন পরেই বেহুশ হয়ে যাবে…
আবির : (নিলাকে কোলে তুলে নিলাম…
হসপিটাল নিয়ে গিয়ে..ডাক্তারকে আর একমিনিট ও লেট করতে দেইনি।
অবশ্য ডাক্তার আমাকে ভালো করে চেনে দাদীকে নিয়ে বার বার আসতে হয়। এইখানে….তাই।
নিলাকে নিজেই কোলে করে ড্রেসিংরুমে শুয়ে দিয়ে আসি।
তেমন বড় এক্সিডেন্ট হয়নি….ভয় পাওয়ার কিছু নেই ডাক্তার বলছে…
তবুও মনকে বুঝাতে পারছি না।
কারন নিলার আজ এই অবস্থার জন্য দায়ী আমি।
ভাবীকে ফোন দিলাম টেনশন করতে নিষেধ করলাম।
ভাবীকে ভাবী বললে ও মানায় না আমার মায়ের চেয়ে ও বেশি আদর করে আমাকে…
প্রায় আধঘন্টা পরে ডাক্তার এসে বলে…
পায়ে আঘাত পেয়েছে তাই একটু রেস্ট নেওয়ার জন্য হাটাচলা কম করতে বলেছে কয়েকদিন।
মাথার পিছনে আঘাত পেয়েছে তাই ড্রেসিং করে দিয়েছে সেলাই করতে হয়নি।
ডাক্তারকে বললাম নিলাকে নিয়ে যেতে পারবো নাকি।
ডাক্তার : দূর্বল হয়ে যাওয়াতে পেশেন্টকে একটা সেলাইন দিয়েছি ২/৩ ঘন্টা রেখে নিয়ে যেতে পারবেন।
নিলার কাছে গেলাম…আমাকে দেখে চোখ দিয়ে পানি ঝরতে লাগলো…
বুঝতে পারলাম খুব কষ্ট হচ্ছে নিলার..
চলবে…?

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে