টেম্পরারি_বিয়ে _৯_এবং_শেষ_পর্ব

0
4530

টেম্পরারি_বিয়ে
_৯_এবং_শেষ_পর্ব
Written by Avantika Anh
পরেরদিন আবির উঠে দেখে আহান পাশে নেই । আনহা কেও দেখছে না ।
আবির : আনহা ( ডাক দিলাম )
আমি : বলুন
আবির : ও তুমি আছো ।
আমি : কি দরকার ?
আবির : ভিডিও কল
আমি : মানে ?
আবির : আরে মা কে দেখাবো তার নাতি কে ।
আমি : ভালো ।
.
.
আবির ভিডিও কল দিলো আরোহি কে
.
আরোহি : হুম ভাইয়া বল
আবির : তোর ভাগিনা হইছে রে
আরোহি : সত্যি ?
আবির : হুম
আরোহি : কই ও ? নাম কি ?
আবির : আহান । এই দেখ ( আহান কে দেখিয়ে )
আরোহি : ভাইয়া কতো কিউট । একদম ভাবির মতো । ভাবি কই ?
আবির : আছে কিন্তু এখনো রাজি হয় নি ।
.
ওই ভাবির মতো মানে ? আমার মতো হয় নি ?
আরোহি : না ফুল ভাবির মতো । ভাবি কে ফোন দে ।
আবির : নে
.
.
.
আমি : হুম আরোহি বলো ।
আরোহি : ভাবি ভাইয়া অনুতপ্ত । ওকে ক্ষমা করে দাও ।
আমি : কিছু জিনিসের ক্ষমা হয় না আরোহি ।
আরোহি : হুম কিন্তু
আমি : কোনো কিন্তু না ।
.
ফোন টা আবির কে দিয়ে দিলাম ।
.
আবির : এখন কি করবো বল ?
আরোহি : আইডিয়া আছে ।
আবির : কি
আরোহি : ……………. ( আইডিয়া বললো )
.
পরেরদিন আমি অফিসে গেলাম । আবির ফোন করলো ।
.
আমি : হুম বলুন ।
আবির : আনহা আম্মু অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ছে । ( মিথ্যা কথা । আরোহির প্লান )
আমি : কিইইই ? কিভাবে ? কই সে ? এখন কেমন আছে ?
আবির : ওতো ভালো না । আমি বাংলাদেশে ফিরছি । সে ইচ্ছা প্রকাশ করছে তোমাকে আর আহান কে দেখার । তুমি আসলে ভালো হয় ।
আমি : ওকে আমি এখনি ব্যবস্থা করছি ইমার্জেন্সি ভিসা আর টিকিট এর ।
আবির : হুম ।
.
.
কিছুদিন পর….
প্লেনে…….
আবির : বাহ এখন আর ভয় পাও না দেখছি ।
আমি : আগে অনেক কিছুই ভয় পাই না
আবির : বেশ ভালো জানু ।
আমি : কে জানু ?
আবির : তুমি
আমি : কেনো নিহা আছে না ?
আবির : সরি তো
আমি : নো মাফ
আবির : হুররর
আমি : হুহ
.
.
বাড়িতে…………..
আবিরের আম্মু নাটক করছিলো অসুস্থতার । সেই সথে আমার পরিবারও এসেছিলো । সবাই আমাকে দেখে খুব খুশি । আহান কেও কোলে নিচ্ছে সবাই ।
.
মা : আনহা মা (আবিরের মা)
আমি : জ্বী মা বলুন
মা : আমি তো মরেই যাবো ।
আমি : এভাবে বলবেন না
মা : আমার শেষ ইচ্ছা টা রাখ তোরা একসাথে থাক । আহানেরও তো পিতার প্রয়োজন ।
আমি : কিন্তু
মা : আমার শেষ ইচ্ছা এটা
আমি : আচ্ছা যা আপনার ইচ্ছা তাই হবে ।
মা : থেংকস মা
আমি : থেংক ইউ এর কিছু নেই ।
.
সেদিন সবাই খুশি হলো । রাতে রুমে ।
.
আবির এসে জড়িয়ে ধরলো । আমি ছাড়িয়ে নিলাম ।
.
আবির : আমি জানি তো এতো সহজে মানার মেয়ে তুমি নও । শুধু মায়ের জন্য রাজি হইছো ।
আমি : যখন জানেন ই তো জড়িয়ে ধরলেন কেনো ?
আবির : আমার বউ আমার ইচ্ছা
আমি : বড় আইছে নিহার কাছে যান ।
আবির : বউ থাকতে অন্যের কাছে যাবো কেন ?
আমি : আগেও গেছেন ।
আবির : সরি
আমি : হুহ । আমি ঘুমাবো বাই ।
.
.
.
রাতে ঘুম ভাঙ্গে গেলো । দেখলাম আবির পমাকে জড়িয়ে ধরে আছে । আমি ছাড়িয়ে নিলাম ।
(ভাবছি আহান কে দোলনায় রাখলো কে ? নিশ্চয়ই আবির )
.
সকালে….
আবির : বউ নাস্তা কি ?
আমি : আলুর পরোটা ( মা ছিলো তাই জবাব দিলাম )
আবির : বাহ ভালোই ।
.
নাস্তার টেবিলে সবাই খাচ্ছে আবির খাচ্ছে না ।
মা : কি রে খাচ্ছিস না কেনো ?
আবির : হাতে ব্যাথা পাইছি ।
আমি : (ভাবছি কখন পাইলো ব্যাথা কে জানি ?)
মা : ও‌ এই ব্যাপার । বৌমা খাওয়ায় দিবে তোকে বউমা ।
আমি : আ..আমি
মা : হুম
.
কি আর করার খাইয়েই দিলাম ।
.
রুমে….
আবির : তোমার হাতে খাইতে সেই মজা ।
আমি : হুহ ভাগেন
আবির : না বউ আমি ভাগবো না ।
আমি : হাত কেমনে কাটছে ?
আবির : কখন কাটছে ?
আমি : মানে ?
আবির : কাটে নি তো
আমি : তাহলে ব্যান্ডেজ কেনো ?
আবির : তোমার হাতে খাওয়ার জন্য
আমি : আপনি খচ্চর হয়ে গেছেন
আবির : তোমার কাছেই শিখছি
আমি : দুররররর ।
.
রাতে আবির অনেক গুলো কিটক্যাট আনে আমাকে দিলো ।
আমি : কিটক্যাট থেংকু ।
আবির : ওয়েলকাম ।
আমি : না না না নিবো না আপনার কোনো জিনিস নিবো না
আবির : সত্যি
আমি : জ্বী ।
আবির : ওকে আমি ই খাই ।
.
ইয়াম কি মজা ।
.
আমি কেড়ে নিলাম সব ।
আবির : কি হলো সব কেড়ে নিলে কেনো ?
আমি : এগুলো আমার আমি দিবো না কাউকে ।
আবির : তুমি বলে নিবা না ।
আমি : না আমি নিবো ।
আবির : হাহা নাও
আমি : হুম ।
.
.
দেখতে দেখতে আহান এর জন্মদিন আসলো । প্রথম জন্মদিন বলে সবাই ধুমধাম করেই আয়োজন করলো ।
.
আহান এখন গুটি গুটি পায়ে হাটতে পারে । একটু আধতু ডাকতেও পারে মা বলে , বাবা বলে ।
.
জন্মদিনের জন্য আমি রেডি হচ্ছি । আবির আসলো ।
আবির : বাহ বউ তোমাকে তো খুব কিউট লাগছে ইচ্ছে করছে এখনি বিয়ে করি ।
আমি : হুহ
আবির : বউ নিহা আসছে
আমি : কেনো ওই শাকচুন্নি কেনো ? (মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে)
আবির : এ্যা শাকচুন্নি হাহা
আমি : সরি ভুলে বলছি
আবির : জানি তো ওকে শাকচুন্নিই ভাবো ।
.
সেদিন কার্ড দিচ্ছিলাম । ও দেখে ফেলছিলো । সামনে ছিলো তাই দাওয়াত টা দিছি ।
.
ফাংশনে…….
.
.
আমি আর আবির দাঁড়িয়ে ছিলাম । আহান আমার কোলে ছিলো । এমন সময় নিহা আসলো ।
নিহা : বাহ কিউট হইছে তো তোমাদের বেবি টা ।
আমি : থেংক ইউ ।
নিহা : আজ আমার আর আবিরের বিয়ে হলে আমাদেরও এমন একটা বেবি হতো হাহা ।
আমি : হুম
.
.
আমি আহান কে নিয়ে অন্য দিকে গেলাম । নিহার কথা টা ভালো লাগে নি ।
.
আবির বুঝলো আমার খারাপ লাগছে । আমি যাওয়ার পর ।
.
আবির : একেই বলে লাইফ তাই না নিহা ।
নিহা : কেনো ?
আবির : হাহা আমি অনেক লাকি আনহা কে পেয়ে ।
নিহা : হুম
আবির : তুমি তো পেয়েও ছেড়ে দিছিলা । ওই মেয়েটা পাশে ছিলো । আবার তোমার জন্যই আমি ওকে হারাতে বসেছিলাম । অবশ্য এতে পমারো দোষ ছিলো । বাদ দেও ।
নিহা : কি বুঝাতে চাও ?
আবির : কিছু মানুষ আজকাল নিজে না পেলে যে পায় তাকে খোঁচা মারে তাই না ।
নিহা : আবির তুমি আমাকে এভাবে বলছো কেনো ?
আবির : তুমি আনহা কে কেনো ওভাবে বললা ?
নিহা : না মানে
আবির : বাদ দাও আমার ছেলের জন্মদিনে আসছো খাও । ওকে দোয়া দাওআর চলে যাও । আশা করি আর কোনোদিন আমাদের দেখা হবে না ।
.
নিহা আর কিছু বললো না । আবির জানে তার আর কিছু বলার নাই । আবিরও চলে আসলো ।
.
.
আমি দেখলাম আবির নিহার সাথে হেসে কথা বলছিলো । তাই রেগে গেছি ।
.
অনুষ্ঠানের মাঝে আনহার হাত ধরে টেনে নিলাম এক রুমে ।
.
আমি : আমাকে টানলেন কেনো ?
আবির : বাহ্ রে বউ এর সাথে একটু রোমান্স করবো না ।
আমি : নিহা আছে না আপনার যান হেসে হেসে কথা বলুন ।
আবির : বাহ কিছু জ্বলতেছে নাকি ?
আমি : না কিছু জ্বলে না আমি যাবো ছাড়ুন আমাকে
আবির : ও তাহলে আমি নিহার কাছে যাই ।
আমি : পা ভাঙ্গে দিবো
আবির : বাবা রে গুন্ডি নাকি ।
আমি : আপনি পমার বর অন্য মেয়ের কাছে গেলে পা ভাঙ্গে দিবো ।
আবির : এই কথা টা সেদিন বলো নি কেনো ?
আমি : কবে ?
আবির : লন্ডনে
আমি : আপনিই তো নিহা কে হ্যা বলছিলেন ।
আবির : সরি তো
.
.
আবির হাটু গেড়ে বসলো….
আবির : আনহা জানি আমি অনেক কষ্ট দিছি । মাফ করবা কি না জানি না । কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি । বাসবো । তুমি না বাসলেও আমাকে ভালোবাসার অধিকার দিও ।
আমি : উঠুন
আবির : কেনো
আমি : মাফ করবো আপনাকে কিন্তু
আবির : কি ?
আমি : বিয়ে করতে হবে ।
আবির : এমা আবার আরেকটা বিয়ে করবো দুই বউ কেমনে সামলাবো ।
আমি : থাক লাগবে না নো মাফ বাই ।
আবির : আরে আরে রাগো কেনো ?
আমি : বিয়ে করুন এবং আজকে এখানে সবার সামনে ।
আবির : ওয়েট এবং ওয়াচ
আমি : হিহি
.
.
সেদিন বিয়ে করছি সেই অনুষ্ঠানে পরিচিত কাজি কে ডেকে ।
.
সবাই খুশিই ছিলো ।
.
রাতে….
আবির এলো….
আবির : বউ
আমি : হুমমম বলো বর
আবির : হাহা রাগ ভাংগায় ছাড়ছি
আমি : হুম
আবির : আহান কই ?
আমি : আরোহির কাছে
আবির : বাহ তাইলে ভালোই হলো
আমি : না আমি ওকে মিস করতেছি
আবির : হেহে
আমি : কি
আবির : এই নাও
আমি : ওয়াও কিটক্যাট
আবির : তুমি না এখনো বাচ্চাই আছো ।
আমি : আমি বড় হলাম কবে?
আবির : হাহা আই লাভ ইউ
আমি : আই লাভ ইউ টু আহিয়ার আব্বু
আবির : এমা আহিয়া কে ?
আমি : জুনিয়ার আহান
আবির : হা হা কবে আসবে ?
আমি : ৫ বছর পর
আবির : ভাবতেছি ১১ টা বাচ্চা নিবো
আমি : হুররর মাথা নষ্ট
আবির : তাই নাকি ।
.
তা আজ রাত জাগবা না ।
আমি : কেনো ?
আবির : এর আগের বার কি করছিলা ?
আমি : হেহে আমি ঘুমাবো
আবির : ওমা তাই নাকি আগে একটু জড়িয়ে ধরি তোমাকে
আমি : বুড়া মানুষের ধং জাগছে
আবির : ওই আমি বুড়া
আমি : হুম বুড়া তো
আবির : তাই নাকি তাহলে বুড়ার বুড়ি তুমি
আমি : এ্যা আমি পিচ্চি
আবির : হাহা
আমি : হুম
.
.
.
এরপর শুরু হয় এক নতুন ভালোবাসার গল্প
#কাল্পনিক_গল্প
.
…….সমাপ্ত…….
.
(পাশে থাকুন নতুন গল্পের জন্য)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে