হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part: 7

0
5040

হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part: 7

লেখা –সুলতানা ইতি

 

এই ভাবেই গেলো কিছু দিন,

আগামি কাল আনুশার এক্সাম তাই পড়া শুনা করছে,, টিউশনির স্টুডেন্টদের ও বলে দিয়েছি কয়েক দিন পড়াতে পারবে না, আনুশা চায় না তার পড়ার কোন।ক্ষতি হোক

আনুশার আম্মু: হ্যারে আনু শিলা চায় তোর পরিক্ষার পরে এসে কয়েক দিন থাকতে তুই কি বলিস

আনুশা: মা এটা তুমি কি বলছো বড় আপুর আসতে ইচ্ছে হয়েছে সে আসবে এতে এক্সাম এর সাথে সম্পর্ক কি,আপু কে তুমি কাল ই আসতে বলে দাও

আনুশার আম্মু: না মানে এখানে তো থাকার তেমন জায়গা নেই, একটা রুম আমরা মা মেয়ে থাকি,আর ওর ছেলে মেয়ে আসলে ওরা দুষ্টামি করবে তোর পড়া শুনার ডিস্টার্ব হবে ভেবে আমি নিষেধ করেছি

আনুশা: তা ঠিক বলেছো আমি ও তো কিছু ভেবে দেখিনি,টেনশন করো না মা এক্সাম টা ভালো ভাবে হয়ে গেলে যদি ভালো রেজাল্ট করতে পারি তো একটা জব পেলে এই বাসা টা ছেড়ে দিবো

আনুশার আম্মু: আল্লাহহ যেন তোর মনের আশা পূর্ন করে
আনুশা রাত একটা পর্যন্ত পড়লো এক্সাম এর চিন্তায় ওর ঘুম আসতেই চাইছে না

তানভীর : কাল এক্সাম আর আজ ও ঠিক করে পড়তে পারছি না কি যে করি,আচ্ছা আনুশা কি আমার কথা এমন করে ভাবে, কি জানি হয়তো ভাবে না,
আচ্ছা আনুশা কি পড়তে পড়তে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে,হবে হয় তো,
মেয়েটা যে গ্রন্থ কীট, পড়তে পড়তে হয় তো পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে পড়েছে, আচ্ছা আনুশা ঘুমালে কি ওর মুখে চুল এলো মেলো হয়ে এসে পড়ে,ইসস যদি ওর ঘুমন্ত মুখ টা একবার ছুঁয়ে দিতে পারতাম

তানভীর এর আম্মু: অনেক রাত হয়েছে দেখে আসি ছেলেটা ঘুমিয়েছে কি না,
সে কি ছেলেটা তো আমার পড়া শুনা বাদ দিয়ে ভাবনায় ডুবে আছে তানভীর এই তানভীর, কিরে পড়ছিস না কেনো

তানভীর ; আম্মু পড়ছি তো

আম্মু: আর পড়তে হবে না অনেক রাত হয়েছে এই বার ঘুমা,

তানভীর : ঠিক আছে আম্মু, তুমি আমাকে একটু তাড়া তাড়ি ডেকে দিও, এখন লাইট অফ করে দাও

আম্মু:হুম দিচ্ছি

তানভীর : আম্মু চলে গেছে, অন্ধকারে ও যেন আনুশা কে দেখতে পাচ্ছি অনেক দিন হলো ঠিক করে ঘুমাই না,ঘুম যে আনুশার ঐ মায়াবী চাহনিতে আটকে গেছে,

সকাল বেলা,আনুশা তাড়া তাড়ি ফ্রেশ হয়ে এক্সাম দিতে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে
আনুশার আম্মু: আনু সব কিছু মনে করে নিয়েছিস তো ভুলে কিছু পেলে রাখিসনি তো
আনুশা: না মা তুমি দেখো সব নিয়েছি আর তোমার মেয়ে এতো টা ও মন ভুলো নয় যে প্রয়োজনীয় জিনিশ পেলে যাবে
#
এদিকে তানভীর ভাবছে কিছুই তো পড়েনি কি লিখবো,আল্লাহ কপালে যা রাখছে তা ই হবে ভেবে লাব নাই,

তানভীর আম্মু:তানভীর এই নে তোর সব রেডি করে দিয়েছি এই বার আল্লাহর নাম করে বের হও
তানভীর মায়ের দোয়া নিয়ে বেরিয়ে গেলো,

এ ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম এর পর আজ ওদের এক্সাম শেষ হলো,

আনুশা :মা বড্ড ক্লান্ত লাগছে,আজ আর কোথায় যাবো ণা, সারা দিন ঘুমাবো

আনুশার আম্মু: তুই ভুলে গেছিস আজকে যে শিলা আসবে আর তোকে কিন্তু স্টেশন এ আনতে যেতে হবে,আমার বড় মেয়েটা একদম বোকা, ও আসতে পারবে না এতো দূর

আনুশা: হুম তা যা বলেছো আপু এমন দেখেই দুলা ভাই ওর সাথে চালাকি করে পার পেয়ে যায়

আনুশার আম্মু: হুম তা ঠিক,আচ্ছা এখন আর কথা বলিস না ঘুমা,আমি বিকেল ও জাগিয়ে দিবো তোকে,
আনুশা কিছু না বলেই ঘুমের দেশে হারিয়ে গেছে

তানভীর : এক্সাম তেমন একটা ভালো হয়নি কোন ভাবে টেনে টুনে পাশ করবো,কিন্তু আমি এতো দিন থাকবো কি করে আনুশা কে না দেখে, আল্লাহ প্লিজ তুমি আনুশা কে খুঁজে দাও, এক্সাম এর জন্য ওর সাথে কথা বলতে পারিনি,সেদিন সবার আগে স্যার কে অনেক রিকুয়েস্ট করে সময়ের আগে কাগজ জমা দিয়ে হল থেকে বের হই, শুধু আনুশার সাথে একটু কথা বলবো এই ভেবে,

তানভীর : ঐ তো আনুশা হল থেকে বের হয়েছে এই আনুশা দাড়া ও প্লিজ যেও না
আনুশা: তানভীর আবার ডাকছে উফফ কি করলে যে এই ছেলেটা আমার পিছু ছাড়বে আমি নিজে ও জানি না,দাঁড়িয়ে পড়লাম

তানভীর : কেমন আছো আনুশা

আনুশা: আপনি আমি কেমন আছি এটা জানার জন্য আমাকে ডেকেছেন,
তানভীর : কেনো আমি জানতে পারি না

আনুশা: (এই ছেলের সাথে কথা না বাড়ানো ই ভালো) হুম ভাল আছি আর কিছু

তানভীর : আমি কেমন আছি জানতে চাইবে না
আনুশা: জানার প্র‍য়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না,, আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে ভালোইই আছেন (অন্য দিকে ফিরে কথা টা বললাম,)

তানভীর : তুমি আমার চোখের দিকে একবার তাকাও আনুশা,দেখবে সে চোখে তোমার ভালোবাসা পাওয়ার আকুলতা কতো টা

আনুশা: অনেক কস্টে নিজের রাগ কে কন্ট্রোল করে বললাম,আপনার কথা শেষ হয়েছে এবার তা হলে আমি আসতে পারি, এই বলে তানভীর কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো

তানভীর : সেদিন যাওয়ার পথে চেয়ে রইলাম এই আশায় যদি আনুশা একবার পিছনে ফিরে তাকায়,কিন্তু ওর মনে যে অনেক ঘৃনা একটি বার ও তাকালো না
একা একা ভালো লাগছে না, যাই ফ্রেন্ডস দের সাথে একটু আড্ডা দিই,
তানিম কে একটা ফোন করি, তানিম হলো তানভীর এর বেষ্ট ফ্রেন্ড,

তানভীরের আম্মু: কিরে কোথায় ও যাচ্ছিস নাকি

তানভীর : হুম আম্মু তানিমের সাথে দেখা করতে, আমার ফিরতে রাত হবে তুমি খেয়ে শুয়ে পড়বে কেমন

আম্মু: বেশি রাত করিস না,

তানভীর : বললাম তো ফিরতে রাত হবে, এই বলে তানভীর বেরিয়ে পড়লো

আনুশা : বড় আপুর জন্য স্টেশন এ দাঁড়িয়ে আছি এখন বাস আসেনি

তানভীর : তানিমের সাথে কথা বলতে বলতে স্টেশন এ চলে আসলাম,(আসার কোন কারন ছিলো না,এমনি হাটতে হাটতে মনের অজান্তে চলে এলাম)
আরে এ আনুশা না, খুশিতে তানভীরের চোখ চক চক করে উঠলো ভাবতেই পারিনি ওকে এই ভাবে দেখবো

তানিম; আচ্ছা তানভীর তুই আনুশার মাঝে কি এমন খুজে পেলি বলতো শুধু দেখতে একটু সুন্দর আর কি,দেমাগে ভর পুর কারো সাথে কথা বলে না,
তানভীর : তুই এমন করে বলছিস কেনো ও এমনি তে কথা বলা পছন্দ করে না
তানিম: বুঝলাম ও ছেলেদের সাথে কথা বলা পছন্দ করে না,কিন্তু মেয়েরা কি দোষ করলো,কোন দিন আনুশাকে দেখেছিস কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে

তানভীর : তানিম তুই থামবি,( তানিমের মুখে আনুশা সম্পর্কে এগুলা শুনতে আমার মোটেই ভালো লাগছে না তাই ওকে থামিয়ে দিলাম) অনেক্ষন। আনুশাকে দূর থেকে দেখছি, ভাবলাম আজ আনুশা কে follow করে ওর বাড়ি পর্যন্ত যাবো, তাই ওর সামনে গেলাম না, সামনে গেলে হয় তো সে আমার চোখ পাকি দিতে পারে

আনুশা: উফফ আর কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবো, পা ব্যাথা হয়ে গেলো তো
প্রায় ৩০ মিনিট পর শিলা বাস থেকে নামলো আনুশা তার ছোট্ট ভাগ্নি টাকে কলে নিয়ে আদর করতে থাকে,

আনুশা: আপু এবার কিন্তু অনেক দিন থাকবে তুমি এই বলে দিলাম

শিলা: আচ্ছা থাকবো এখন টেক্সি ডাক,আনুশা টেক্সি ডেকে উঠে পড়লো

তানভীর : আগেই C.N.G ঠিক করে রেখেছিল আনুশার টেক্সি তে উঠার সাথে সাথে অদের পিছু পিছু যেতে লাগলো,তানিমের মুখ দেখে মনে হচ্ছে আনুশাকে follow করাতে ও একদম খুশি নয়, তাতে তানভীর এর কিছু যায় আসে না ওর ভাবনা আনুশার বাসা অব্দি পৌছানো

আনুশা: আপু দুলা ভাই আসেনি কেনো

শিলা: ওর কাজ আছে তাই,আর বলে আসলে থাকবে কোথায় তাই আসেনি

আনুশা: কিচ্ছু বললাম না আপুকে,শুধু নিজের মনকে বললাম ধৈয্য ধরার শক্তি দিতে আপুকে নিয়ে বাসায় পৌছালাম

to be continue

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে