পুরোনো_ভালোবাসা   পার্ট: ৭

0
1873

পুরোনো_ভালোবাসা

পার্ট: ৭

#Rabeya Sultana Nipa

_ক্লাস শেষ করেই নিশিতা বাড়ি ফিরলো। মা! মা! কই তুমি? চিৎকার করে করে কি বাড়ি টা মাথায় তুলবি নাকি? বলতে বলতে নিশিতার মা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো।কি হয়েছে তোর আজ তোকে এতো খুশি দেখাচ্ছে কেন?
__মা! তুমি যে কিভাবে সব বুজে যাও আমি নিজেও বুজতে পারিনা। হুম তোমার মেয়ে সত্যি আজ অনেক খুশি।অনেক দিন যে জিনিসটা মনে মনে চাইতাম তা আজ পেয়ে গেছি।
__মেয়ের কথা শুনে ইয়াসমিন বেগম আস্তে আস্তে মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে জরিয়ে ধরলো।আমি তোকে অনেক বিশ্বাস করি।তুই আমাদের একটা মাএ মেয়ে। তোর খুশির জন্য আমারা সব করতে পারি।তুই এমন কিছু করিসনা যাতে আমরা কষ্ট পাই। ছোটোবেলা থেকে তুই যা চেয়েছিস তাই দিয়েছি। তুই যা করতে বলসোস তাই করতে দিয়েছি।তোর অন্যায় আবদার গুলো আমি সহজে মেনে নিয়েছি।কারণ বড় হলে তুই ঠিক হয়ে যাবি এই কথা ভেবে।
__মা! আমি জানি তুমি কি বলতে চাইছো।আমি এমন কিছু করবোনা যাতে তোমরা কষ্ট পাও।যদি কিছু করি তাহলে আমার এই মাটাকে জানিয়ে করবো।আর কোনো কথা নয় আমার খুব ক্ষুধা লাগছে খেতে দাও।আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
_মেয়ের কথা শুনে ইয়াসমিন বেগমের মনটা চিন্তা মুক্তো হলো।মনে মনে ভাবলো নিশুর বাবা আজ আসলে নিশুর ব্যাপারে কথা বলবো।কি এমন কাজ করে আমাদের সময় দিতে পারেনা।সে দিন বলেছিলো ওর কোন ফ্রেন্ডের ছেলের সাথে নিশুর বিয়ের কথা।আজ আসলে বলবো মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে ছেলের বাবার সাথে।
_আচ্ছা অনিক তুমি আমায় এতো ভালোবাসো কেন বলোতো? আমি যাই বলি না কেন তুমি এতো সহজে মেনে নাও কেন?
ভালোবাসি বলেই তো মেনে নিই। নিশু তুমি জানোনা তুমি আমার জীবনে কি।তোমার জন্য আমার এই জীবন দিয়ে দিতে পারি।(দুজনেই ফোনে কথা গুলো বলছে)
_এইভাবে তাদের ৬ মাস কেটে গেলো একে অপরকে একদিনও না দেখে থাকতে পারেনা।প্রতি দিন তাদের ফোনেও কথা হয়।
__নিশু! নিশু! তুই কথায় তাড়াতাড়ি এইদিকে আয়।
মা! তুমি এইভাবে ডাকছো কেন, কি হয়েছে?
__কি হয়নি বল? তোর ছোটো মামার বিয়ে ঠিক হয়েছে।তাও আবার দুইদিন পর বিয়ে।এতো মেয়ে দেখালাম তার পছন্দই হয় না। শেষমেশ একটা হলো।তাড়াতাড়ি সবকিছু গুছিয়ে নে বিকালে আমাদের যেতে হবে।তোর মামা বলেছে আমরা না গেলে বিয়েই করবে না।
__নিশু মনে মনে ভাবতে লাগলো আমি গেলে অনকে সাথে কথা হবে কি করে, দেখা হবে কিরে।অনিক কে না দেখে থাকবো কি করে।না গেলেও উপায় নাই।
মা! আমি একটু বাহিরে থেকে আসছি।আধাঘণ্টায় চলে আসবো।
__এই বলেই নিশু বাহিরে চলে গেলো।অনিককে ফোন দিয়েছে আসার জন্য। নিশু অপেক্ষা করছে অনিকের জন্য।
অনিক এসেই নিশুর হাত ধরে বললো কি হয়েছে তোমার?হঠাৎ এইভাবে আসতে বললে।আমি এখন যখন আসতে পারবোনা এই কয়দিন আমার পরিক্ষা চলতেছে।পরিক্ষা শেষ হলে তুমি যখন বলবে তখন দেখা করবো।
_অনিকের কথা শুনে নিশু মুখ মেঘের মতো কালো হয়ে গেলো।তারপর অনিকের দিকে তাকিয়ে বললো আমার কয়েক দিন তোমার সাথে দেখা হবে না। তাই এখন দেখা করার জন্য ডেকেছি।
__সরি লক্ষি আমাকে মাপ করে দাও আসলে আমি তো জানিনা তাই এমন করে কথা বলে পেললাম।তো আমার লক্ষি কেন দেখা করতে পারবে না আমি জানতে পারি ?
__মামার বিয়ে আমি ওইখানে যাচ্ছি তাই কয়েক দিন দেখা করতে পারবোনা।কিন্তু আমি তোমাকে না দেখে থাকবো কি করে?
__মন খারাপ করো না কয়দিনের তো ব্যাপার।তারপর তো আমরা আবার এক হয়ে যাবো।ওখানে গিয়ে কিন্তু ফোন করবে না হলে তো বুঝো কি করবো।
__আচ্ছা তাহলে আমি আসি।অনিকের বুকে মাথা রেখে নিশু অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েছিল মনে হচ্ছে কয় দিন তো নয় কয়েক যুগ অনিককে দেখবে না।আচ্ছা অনিকেরও কি তাই মনে হচ্ছে।
__নিশু কি ভাবছো এতো?তোমার না যেতে হবে।গিয়ে কিন্তু ফোন দিবে।না হলে আমি পাগল হয়ে যাবো।
__হুম, বলে নিশু বাড়ির দিকে পা বাড়ালো।
__মেয়েটা যে কি করে না করে আল্লাই ভালো জানে এতো করে বললাম তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে নিতে তা নাকে কথায় গিয়ে আড্ডা দিচ্ছে কথা গুলো বলতে বলতে নিশিতার মা সব কিছু নিজেই গুছিয়ে নিচ্ছে।
__সবাই মিলে নিশিতার মামার বাড়ি পৌছালো।
তাদের দেখে সবাই অনেক খুশি।নিশিতার চার মামা তিন জনেই বিয়ে করেছে সবার ঘরের ছেলে মেয়ে গুলো নিশিতা কে দেখে অনেক খুশি।নিশিতা তাদের সবার বড়।নিশিতার মা তাদের একটাই বোন।নিশিতাও তাদের একমাত্র ভাগ্নি তাই সবার আদরের নিশিতা।
ছোটোমামা-নিশু তুই এসে গেছিস আমি কিন্তু তোর অপেক্ষায় ছিলাম।তুই ছাড়া বিয়ে বলে মনেই হবে না।
সবাই কত খুশি কিন্তু নিশিতা মন পড়ে আছে সেই অনিকের মাঝে।
__বড়মামী-নিশু যাও ফ্রেস হয়ে আসো কত কাজ বাকি আছে তোমার মামাতো তোমাকে ছাড়া কোনো কাজই করবে না।
নিশু মাথা নাড়িয়ে রুমে চলে গেলো ফ্রেস হতে।
ফ্রেস হয়ে এসে ভাবলো অনিককে একটা ফোন দিই না হলে ও চিন্তা করবে।
__নিশু অনিকের সাথে কথা বলা শেষ করেই রুম থেকে বাহিরে যাওয়ার সময় তার মামাতো বোন নিরা তার হাত ধরে বললো আপু তুমি কার সাথে কথা বলছিলে?
নিশু নিরার গালে কিস করে বললো আমার এক ফ্রেন্ডের সাথে।আপু নাকি অন্য কিছু? নিশু নিরার কথা শুনে অবাক। কারণ নিরার এখন ৬ বছর এখুনি সে এতো কিছু বুজে। পাকামি করা হচ্ছে আমার সাথে।
__মেজো মামী এসে নিশুকে জড়িয়ে ধরে বললো কতো দিন পর তোকে দেখলাম।কেমন আছিস তুই।তখন রান্না ঘরে ছিলাম তাই তোর সাথে কথা বলতে পারি নাই।
নিশু-আমি তো ভালো আছি।কিন্তু জানো নিরার কি পাকা পাকা কথা বলে।
নিরা-আপু আমি কিন্তু এখন বলে দিবো তুমি যে তখন কি করছিলা।
দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা! বলেই নিশু আর নিরা দুজনেই দৌঁড়াচ্ছে।

চলবে,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে