ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_৩

0
3961

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৩
Written by Avantika Anh
আমি- হারামি কি করলি এগুলো ?
শুভ- ভালোই তো লাগতেছে ।
আমি- হ হুতুম পেঁচার মতো ।
শুভ- ওমা তুই হুতুম পেঁচা বাহ ভালো নাম তো ।
আমি- হুর হালা ।
শুভ- হলুদ মাখছিস বিয়াটাও কইরালা ।
আমি- হুররর
শুভ- আমি ঘুমামু দুরর হ তুই পেত্নি ।
আমি- তুই রাক্ষস আর তোর বউ পেত্নি
শুভ- হেহে তুই ই বউ
আমি- তোর বউ হইতে আমার বয়েই গেছে ।
শুভ- হেহে আমিও তোর মতো খরগোশ কে বিয়া করুম না ।
আমি- শয়তানননননন
শুভ- যা তো ঘুম পাইছে ।
আমি- কাল দেইখা নিম ।
শুভ- হ দেখিস । এতো কষ্ট কইরা চেহারার যত্ন নেই । একটু দেখিস ।
আমি- তুই দিন দিন বান্দর হয়ে যাচ্ছিস মামনি কে বলা লাগবে ।
শুভ- তুইও দিন দিন বান্দর হয়ে যাচ্ছিস ।
আমি- তোর সাথে কথা বলাই ভুল । গুড নাইট
শুভ- হ যা ।
.
.
রাতে একটু এফবি এ ঢুকে স্ট্যাটাস দিলাম ।
.
“বিয়ে বাড়িতে হলুদে হলুদ হয়ে গেছি”
.
রাতে ঘুমিয়ে গেলাম । সকালে তাড়াতাড়ি নিজে থেকেই উঠলাম আজ শুভ ভাইয়ার উপর শোধ তুলবো । যেই ভাবা সেই কাজ । এক বালতি পানি নিলাম । শুভ ভাইয়া আরাম কইরা ঘুমাচ্ছিলো আর আমি দিছি ঢালে ।
শুভ- আনহা তোরে আমি খাইছি আজ
আমি- হিহি
.
বইলা দৌড় । শুভ ভাইয়া পিছু পিছু আইতেছিলো । পানিতে ভিজা ছিলো তাই পড়ে গেছে । আমি ভালো ভেবে উঠাতে হাত বাড়ালাম । কিন্তু ভাইয়া আমাকে টান দিয়া ফেলায় দিলো । ( কি ভাবছেন রোমান্টিক সিন । আরে না অন্য সাইডে পড়ছি । এতো রোমান্টিক কিনু আপনেরা )
.
আমি- আল্লাহ গো । ফেললি কেন ?
শুভ- তুই আমাকে ভিজাইছোস কেন ?
আমি- এতোদিন আমাকে কতো জ্বালাইছোস ?
শুভ- তোরে আমি কাল সকালে দেইখা নিমু আনহা ।
আমি- হেহে ওকে দেখিস । আমিও দিন দিন সুন্দর হচ্ছি দেখ ভালো কইরা দেখ ।
শুভ- আমার ডায়লগ আমারে
আমি- হ
.
এমন সময় মামনি এসে পড়লো ।
মামনি- কি রে তোরা মাটিতে পড়ে আছিস কেনো ?
আমি- শুভ ভাইয়া আমাকে ফেলায় দিছে
শুভ- না মা এই আনহা টাই তো… ( কথা পূর্ণ করতে দিলো না মা )
মামনি- তুই ই কিছু করছিস মনে হয় । আমার আনহা মা কতো ভালো ।
শুভ- যাক বাবা মা একটা সত্যি কথা বলো আমি ই তোমাদের ছেলে তো ?
মামনি- না তুই তো মানুষের ছেলে । আনহা আমার মেয়ে ।
শুভ- হায় রে এই বয়সে এটা শুনতে হইলো ।
আমি- হিহি ওই রাস্তার ছেলে কাজ কাম নাই আমার কাপড় একটু ধুয়ে দে
শুভ- আনহার বাচ্চি দ্বারা রে
.
এটা শুনার সাথে সাথে আমি দৌড় । পিছনে শুভ ভাইয়াও দৌড় ।
মামনি এদিকে হাসছে আর ভাবছে “এরা দুইটা যে কবে ভালো হবে আর কবে আমি আপুর ইচ্ছে টা পূরণ করবো কে জানে ?”
.
.
ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে……
.
শুভ- ওই হালি খাচ্ছিস নাকি না ।‌ এতো কম কে খায় ।
আমি- কেনো আমি খাই ।
শুভ- এই জন্যই তো এতো পড়ে যাস
আমি- কইলেই হইলো ।
খালু- তোরা দুইটা কবে ঠিক হবি ?
আমি- খালু দেখো সব দোষ ওর ।
খালু- হুম রে মা । শুভ আনহা কে কিছু বলবি না । ও যা করছে করুক ।
আমি- থেংকু খালু আই লাভ ইউ ।
খালু- আই লাভ ইউ টু মা । তোর পড়ার খবর কি ?
আমি- এই তো সামনে এইচ এস সি পরীক্ষা । ( মা এর মৃত্যুতে আমি একটু পড়ায় পিছিয়ে পড়ি)
খালু- শুভ তোর পড়া কেমন ?
শুভ- এইতো এটাই লাস্ট ইয়ার তারপর ভাবছি বিদেশ যাবো ।
খালু- এখন তো ভাবছি তোর বিয়ে দিয়ে দিবো ।
শুভ- যাও তো কি বলি এসব ।
আমি- হুম খালু দিয়ে দাও । দিন দিন বুড়া হয়ে যাচ্ছে শুভ ভাইয়া ।
শুভ- ওই চুপ কর নইলে তোরেই বিয়া করুম
আমি- এহ আইছে ।
মামনি- কথা টা কিন্তু খারাপ না ।
আমি- ইইইইইই আমি বিয়া করুম না ।
.
বলে চলে আসলাম । খাওয়া শেষ তাই । আজ কোনো অনুষ্ঠানে যেতে হবে না কারণ আজ মোহর আর শুভ ভাইয়ার কোনো কাজ নাই ।
.
রুমে এসে ফেসবুকে ঢুকলাম ।
.
কমেন্টে দেখলাম মেঘ বালক আইডির ছেলেটা কমেন্টে আমাকে হুতুম পেঁচা বলছে । তার ইন বক্সে গিয়ে বললাম “আপনি হুতুম পেঁচা দুররর হন”
.
.
কিছু সময় পর একটা গল্প দিয়ে চলে আসলাম । গোসল শেষে আয়নায় তাকাতেই দেখলাম আমার মুখ আর হাত হলুদ হয়ে আছে । ওতোটা খারাপ লাগছে না কিন্তু আমার নিজেকে নিজের কাছে কেমন ভুতনি ভুতনি লাগছে । এমন সময় শুভ ভাইয়া আসলো ।
শুভ- পেত্নি তুই যতোই নিজেকে দেখ খরগোশ ই থাকবি ।
আমি- তুই নিজে যে বান্দর
শুভ- তুই বান্দরনি
আমি- তুই গরু
শুভ- তুই গাভী
আমি- তুই চিকা
শুভ- তুই চিকি
আমি- চিকি কি ?
শুভ- আমি কি জানি ? ওটার লেডিস ভার্শন কি আমি জানি না তাই চিকি বললাম ।
আমি- হায় রে
শুভ- হেহে
আমি- ওই শুন না
শুভ- বল কি চাস ?
আমি- তুই কেমনে বুঝলি আমি কিছু চাই
শুভ- তোকে আমি চিনি
আমি- ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে খাওয়া না‌
শুভ- যা রেডি হ । তুই ও কি মনে রাখবি কোন মহাপুরুষ আমি ।
আমি- হ তুই তো লুঙ্গি পুরুষ‌
শুভ- ওই আমি লুঙ্গি পড়ি না
আমি- হিহি মিথ্যুক খালু তোকে পড়াইছিলো জোড় করায় রাতে ।
শুভ- তুই কেমনে জানলি ?
আমি- আমিই পাঠাইছিলাম খালু রে আর তোর একটা পিক ও তুলছি ওমনে ।
শুভ- হারামি
আমি- হেহে
শুভ- ফুচকা কে খাওয়ায় দেখ ।
আমি- নিজেই আনতে পারুম ।
শুভ- যা যা
.
আমি রাস্তায় বের হয়ে কিছু দুর হাটতেই শুভ ভাইয়া চলে আসলো ।
আমি- আসবি না বলে ?
শুভ- ভাবলাম আমার হবু বউ হারায় গেলে কারে বিয়া করুম ?
আমি- ওই কে তোর বউ?
শুভ- কে আর তুই ।
আমি- ওই আমি তোর বউ না
শুভ- হেহে তুই ই আমার বউ ।
আমি- যা ভাগ দুর হ ।
শুভ- না গো জানু ।
আমি- ওই তুই ঠিক আছিস নাকি পাগল হইলি
শুভ- ঠিক ই আছি
.
ওই‌ আগা জ্বলদি বাড়ি ফিরবো তোরে খাওয়ায় আমি বাইরে যামু একটু পর ।
.
দোকানে….
খাওয়া শেষে শুভ ভাইয়ার প্লেটের দুইটা ফুচকা তুইলা নিছি ।
শুভ- হারামি আমার ফুচকা দে
আমি- দিমু না এই দেখ খাইয়া নিলাম ।
শুভ- হুরর শয়তান
আমি- হিহি
.
বাড়ি ফিরে এলাম ।
.
চলবে…….
.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে