অজানা_অনুভূতি পার্ট: ৫

0
3348

অজানা_অনুভূতি

পার্ট: ৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

নীরার কথা শুনে প্রাপ্তি অবাক হয়ে বললো
তুই প্রেম কিরছিস আর আমি জানি না
দেখছিস তুই কখনোই আমায় আপন ভাবতে পারিস না।আমি যাই হোক না কেন সবকিছু তোকেই বলি।আর তুই আমাকে কিছুই বললি না?

নীরা -আমি তোকে সত্যিই বলতে চেয়েছিলাম।কিন্তু মৃদুল আমায় বলতে নিষেধ করেছে।ও বলেছে ওই তোকে বলবে।

প্রাপ্তি -মৃদুল ছেলেটা কে? কিভাবে যোগাযোগ হয়েছে তোদের?

নীরা -১ বছর হয়ে গেছে।ওর সাথে তেমন কথা হয়না।কলেজে গেলে শুধু দেখা করি।আমাদের ক্লাসের আরশি আছে না ওর ভাই।

প্রাপ্তি -(অবাক হয়ে)১ বছর হয়ে গেলো আর আমি কিছুই জানিনা।ভালোই তো।আরশির ভাইকে দেখলি কেমনে?

নীরা -ওর বোনের সাথে দেখা করতে এসেছিল সেইদিন ও আমাকে আরশির সাথে দেখেছে।তার পর একটু একটু করে এগিয়েছে সব কিছু।

প্রাপ্তি -ঠিক আছে চিন্তা করসিনা আমি আছি তোর সাথে।এখন কাউকে কিছু বলার দরকার নাই।পড়াটা শেষ কর।তারপর সবাইকে সবকিছু বলা যাবে।

প্রাপ্তি, নীরা কই তোরা বড় মায়ের ডাকে দুজনেই দৌঁড়ে ড্রইং রুমে আসলো।

মেজো কাকী -কিরে নাস্তা করবিনা।তাড়াতাড়ি নাস্তা করে কলেজে যাও।

আজ দুজনেই কোনো কথা না বলে নাস্তা করতে বসেছে।

সেজো কাকা-ভাইয়া তুমি কি আজ কোনো কিছু মিস করছো?
(প্রাপ্তি আর নীরাকে চোখ দিয়ে ইশারায় দেখিয়ে)

মেজো কাকা -হ্যা ঠিকি বলছিস।কিন্তু দুইটা বকবক মানুষ হঠাৎ এই ভাবে চুপ হয়ে গেলো কেন?

তারপরেও প্রাপ্তি আর নীরাকে কিছু না বলেতে দেখে

সেজো কাকা -কি হয়েছে তোদের? এইভাবে চুপচাপ হয়ে গেলি কেনো?কেউ কিছু বলেছে? না কিছু লাগবে?

প্রাপ্তি -কেউ কিছু বলেনি আর কিছু লাগবেও না।

সেজো কাকা -তাহলে ঠিক আছে।আর কিছু হলে বলতে পারিস।

প্রাপ্তি আর নীরা কিছু না বলে কলেজে চলে গেলো।

নীরা -প্রাপ্তি চল আজকে তোকে মৃদুলের সাথে দেখা করিয়েদি।

প্রাপ্তি -না আজ না,, অন্য একদিন।এখন এমন কিছু করিস না কেউ দেখে বাসায় গিয়ে বলে।একটু সাবধানে চলার চেষ্টা কর।আচ্ছা তোর ওই মৃদুল কি করে?

নীরা -ও এখনো কিছু করে না। তবে চাকরী জন্য চেষ্টা করতেছে।বলেছে চাকরী ফেলে বাসায় আমাদের কথা জানাবে।

প্রাপ্তি -ওও ভালো।

কলেজ শেষ করেই দুজনে বাসায় এসে দেখে ফারহান। সাথে তার ছোটো কাকাও এসেছে।

প্রাপ্তি -কাকাই তুমি আসলে কখন? তুমি তো মিলির বিয়েতেও আসলেনা।

ছোটো কাকা- একটু আগেই এসেছি।আচ্ছা তোরা আগে ফ্রেশ হয়েনে তারপর আজ সবাই মিলে আড্ডা দিবো।

প্রাপ্তি -(ছোটো কাকার কানের কাছে গিয়ে)এই ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্চাটাকে কেনো নিয়ে এসেছো?

ফারহান -আমি ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্চা!প্রাপ্তি! তুমি কিন্তু এই ভাবে বলতে পারো না।আমি আসতেই চাইনি ইমরান (ছোটো কাকা)আমায় জোর করে নিয়ে এসেছে।

প্রাপ্তি -কই আমি তো কিছু বলিনি। তুমি এইগুলো শুনলে কি করে?

ফারহান -তোমার চুপেচুপে বলতে হবেনা যে মাইক তোমার গলায় মানুষ এমনিতেই শুনবে।

প্রাপ্তি -মা দেখেছো? বলেছিনা এই শুধু এইখানে আসে আমার পিছু লাগার জন্য।ধুরঃ বলেই প্রাপ্তি তার রুমে চলে গেলো।

সবাই প্রাপ্তির কান্ড দেখে সবাই হাসলেও ফারহানের মুখে কোনো হাসি নাই।

প্রাপ্তির মা -(হাসতে হাসতে)বাবা ফারহান কিছু মনে করোনা। আমার মেয়েটা একটু পাগল ধরনের।এমনিতে অনেক ভালো।

ফারহান -না আন্টি আমি কিছু মনে করেনি।বরং আমার ওর সবকিছুই ভালোলাগে।আমি ঢাকায় গেলে ওর এইসব পাগলামি খুব মিস করি।

ফারহানের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে ফারহানের দিকে তাকিয়ে আছে।

সেজো কাকী -ফারহা,,,,,ন!ব্যাপার কি?

ফারহান -কোনো ব্যাপার নাই।
কথাটা বলেই চলে গেলো।

১ মাস পর

প্রাপ্তি আর আয়ান এখন একজন আরেকজন কে ছাড়া থাকতেই পারে না।প্রাপ্তি এই ১ মাস একটা রাতেও ঠিক করে ঘুমায়নি।প্রতিটি রাত আয়ানের সাথে কথা বলে কাটিয়েছ। আয়ান আর প্রাপ্তির সম্পর্ক এখন শুধু বিশ্বাসের উপরেই টিকে আছে।কারন তারা একজন আরেকজনের ছবি ছাড়া সরাসরি এখনো কেউ কাউকে দেখিনি।তারা একে উপরকে না দেখেও নিজেদের সুখ দুঃখ গুলোকে ভাগ করে নেয়।ঘন্টার পর ঘন্টা শুধু দুজন দুজনের কথাই ভাবে।যতো দিন যায় তাদের ভালোভাসাও তোতো গাঢ় হয়।এই ভাবে চলতে থাকে তাদের দিন গুলো।প্রাপ্তি মাঝে মাঝে দেখা করতে চাইলেও আয়ান বলে আমি এখনো কিছু করি না।তোমার ফ্যামিলির সামনে আমি এইভাবে কখনোই দাঁড়াতে পারবোনা।আগে কিছু করি তারপর।আমি তোমাকে তোমার ফ্যামেলির কাছে ছোটো হতে দিতে পারি না।আরানে কথা শুনে প্রাপ্তি আয়ানের উপর ভালোবাসা আরো দিগুণ বেড়ে গেলো।

প্রাপ্তি -জানো আয়ান আমি কখনো ভাবিনি তোমার মতো কাউকে আমার জীবনে পাবো।

আয়ান -প্রাপ্তি আমি চাই না আমার ভালোবাসার কোনো অমর্যদা হক।জানো আমি তোমাকেই প্রথম ভালোবেসেছি।তাও আবার না দেখে।আমার আশেপাশে অনেক মেয়ে আছে কিন্তু তাদের প্রতি আমার কোনো ভালোলাগায় কাজ করে না।

প্রাপ্তি আয়ানের বলা কথা গুলো চুপ করে শুনছে।প্রাপ্তি ভাবছে তুমিও আমার প্রথম ভালোবাসা।তোমাকে আমার মনে হয় তুমি আমার সারাজীবনের আপন কেউ।

প্রাপ্তি! প্রাপ্তি! নীরা ডাকে প্রাপ্তি ফোন রেখে নীরার রুমে এলো।

প্রাপ্তি -কিরে ডাকছিস কেন?

নীরা -আমি বাহিরে যাচ্ছি যাবি?

প্রাপ্তি -এই বিকেলে তুই এখন কোথায় যাবি? আর তোকে একা যেতে দিবে?

নীরা -তোর ওই সব নিয়ে ভাবেতে হবে। মাকে বলেছি আমার কিছু কিনাকাটা আছে। যাবো আর আসবো।তুই গেলো আরো ভালো হতো চলনা।

প্রাপ্তি -একটা কথা বলি।আমার মনে হয় তুই মৃদুলের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিস।

নীরা -হুম, তুই কি করে বুজলি?

প্রাপ্তি -তোর সাজ দেখেই বুজেছি। নীরা আজ তুই না গেলে হয় না। আমার মন জানি কেমন করছে।

নীরা -তুই এই কথা বলছিস(হাসি দিয়ে)কিচ্ছু হবেনা দেখা করেই চলে আসবো।আমি তাহলে যাই তুই আয়ান ভাইয়ার সাথে কথা বল।তোর তো এইছাড়া কোনো কাজ নেই।

নীরা কথা গুলো বাহিরে চলে গেলো।

নীরা আর মৃদুল রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে।এমন সময় তার বাবা ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় নীরা কে দেখে ফেলে। কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আরকি।নীরার বাবা সেখানে নীরাকে কিছু না বলে বাড়ী চলে আসে।।

চলবে,,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে