Contract_marriage★ part- 10 

0
3857

Contract_marriage★
part- 10 

writer-Jubaida Sobti


এইভাবে কেটে গেলো বাকি দিনগুলো।
আজ নিলা আর আবিরের বিয়ে।
আবিরকে তার বেষ্ট ফ্রেন্ড দুজন মিলে রেডি করছে।
আবির : ভেবেছি বিয়েটা তারার সাথে করবো কিন্তু কোথা তেকে এই নিলা উঠে এলো।?
বন্ধু : আহারে নিজেই বিয়ে করছিস আবার নিজেই আফসোস করছিস।?
আবির : আরে কি করবো তোরা বল। নিলা বেচারি। চেহেরা দেখলে কষ্ট হয় ওর। মেয়েটির ও কি দোষ যার সাথে বিয়ে ঠিক করে সেইই রিজেক্ট করে দেই। তবে আমি ওকে সাহায্য করছি। ওকে কি আমি সারাজীবন আমার বউ করে রাখবো নাকি। আমিতো তারাকে বিয়ে করবো উফফফ তারাকে অনেক মিস করছি।
বন্ধু : হে হে আর মিস করতে হবে না তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।
বর যাত্রী বের হলো। সবাই বিয়েতে অনেক আনন্দ করে।কিন্তু নিলার মন অনেক খারাপ।
নিলা আর আবিরের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হলো।
নিলাকে আবিরের বেডরুমে বসিয়ে রাখানো হয়েছে। ফুলের সমাহারে ভরা বিছানা। চারদিক ক্যান্ডেল লাইট আর ফুল দিয়ে সাজানো। এ.সি চলছে। ঠাণ্ডা ঠান্ডা বোধ হচ্ছে নিলার। পা গুলো গুটিয়ে নিয়ে বসে আছে নিলা।
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ হলো।
আবির এসেছে রুমে।
আবির : আরে নিলা কি হলো!!
নিলা : জি!
আবির : নিলা! তুমিতো এমন ভাবে বসে আছো যেন আমাদের ফুলসজ্জা হচ্ছে।
নিলা বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো।
আবির : নিলা! তোমাকে একটা জিনিস দেখাবো।
নিলা : কি জিনিস।
আবির একটি ফাইল নিলার হাতে দিল এবং বললো
আবির : নিলা এটা আমাদের কন্ট্রাক্ট পেপার। এইখানে লিখা আছে ৬ মাস পর্যন্ত তুমি এইখানে থাকতে পারবা। এরপর তুমি আমার জীবন থেকে চিরদিন এর জন্য চলে যাবে।
নিলার শরীরের লোম শিরশির করে উঠলো। একজন মেয়ের কাছে বিয়ের দিন রাতে তার বরের কাছ থেকে পাওয়া কন্ট্রাক্ট পেপার। যাতে লিখা আছে ৬ মাস পরে তাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে।
নিলা : কি করতে হবে এটা।
আবির : সিগ্নেচার করবে।
নিলা : কিন্তু আবির এসবের কি দরকার ছিলো। আমিতো বলেছি আমি চলে যাবো।
আবির : যদি ৬ মাস পরে তুমি দাবী করো যেতে না চাও।
নিলার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো।?
আবির : নিলা কিছু কাগজপত্র আরো আছে সেখানে ও তোমার সিগ্নেচার লাগবে।
নিলা : কি লিখা আছে তাতে?
আবির : নিলা তুমি আমার বউ ঠিক কিন্তু কখনো আমার বউ এর অধিকার পাবা না।
আমার উপর কোনো অধিকার দেখাতে আসবে না।
আমাকে কখনো ভালবাসার চেষ্টা করবে না আমিও তোমাকে ভালোবাসবো না।
আমাদের বিয়েটা শুধু একটা কন্ট্রাক্ট হিসেবে।কন্ট্রাক্ট শেষ হতেই তুমি কোনো দাবী ছাড়া এইখান থেকে চলে যাবে।
নিলা : (কান্না কন্ট্রোল করে) কোথায় কোথায় সই করতে হবে?
আবির : এইতো এইদিকে একটা। এই পেইজ এ একটা।
সব মেয়েরি এইদিনের সপ্ন থাকে। নিলা কখনো ভাবেনি নিলার বিয়ে এমনভাবে হবে।
সই করা শেষ। আবির ফাইলটি নিয়ে আলমারিতে রেখে দিলো।
আবির : আচ্ছা আমরা তো এক খাটে থাকতে পারবো না। এক কাজ করি একদিন আমি খাটে থাকবো আর একদিন তুমি খাটে থাকবা।
যে দিন আমি খাটে থাকবো ঐ দিন তুমি সোফায় থাকবে আর যেদিন তুমি খাটে থাকবে ঐ দিন আমি সোফায় থাকবো।
নিলা : জি!
আবির : এক কাজ করো আজ তুমি খাটে থাকো।
নিলা : না সমস্যা নেই আপনি থাকেন।
আবির : নো ওয়ে। আজ তুমি।
নিলা : বলছি তো আমি থাকি। আপনি খাটে শুয়ে পরুন।
আবির : আচ্ছা ঠিকাছে।
এই বলে আবির নিলার জন্য বালিশ আর গায়ের চাদর নিয়ে সোফায় দিয়ে দেই।
আবির : গুড নাইট নিলা! ঘুমিয়ে পরো।
নিলা : গুড নাইট।
আবির খাটে শুয়ে পরে।
নিলা তার গয়নাগাটি খুলছে ভাবতে ভাবতে আর চোখের জল ফেলতে ফেলতে। আর আবিরের দিকে তাকায় কিছুক্ষণ পর পর আয়না দিয়ে।
আবির ঘুমিয়ে পড়েছে।আবিরের চেহারা থেকে তার চোখ সরাতে পারছে না নিলা। আর ভাবছে যাকে ভালবেসেছে তাকেই বিয়ে করেছে নিলা কিন্তু। এই বিয়ে খানিককালের জন্য।
সকাল হলো হঠাৎ দরজা বাড়ি দিচ্ছিলো আবিরের ভাবী। আবিরের ঘুম ভেংগে গেলো। উঠে দেখে ১০:৩০
(আবির মনে মনে ভাবছে আরে নিলাতো সোফায়। এখন দরজা কেমনি খুলি।)
(আবির নিলার কাছে গিয়ে)
আবির : নিলা! নিলা! নিলাাাা!!!!!
নিলা : উফফ কি হলো এতো সকাল সকাল ডাকছেন কেন (ঘুম চোখে)
আবির : নিলা সকাল সকাল নয় ১০:৩০
নিলা : উফফ আর একটু ঘুমাতে দিন এমনিতে একটু আগে ঘুমিয়েছি। (ঘুম চোখে)
ভাবী : আবির দরজা খোল। অনেকতো ঘুমিয়েছিস। এবার উঠ।
আবির : ঐ নিলাাাা!!!!!! উঠো প্লিজ ভাবী এসেছে ডাকার জন্য।
এই মেয়ে কি নেশার ঘুম ঘুমিয়েছে নাকি। কী করি ভাবী তো দেখে ফেলবে এখন দরজা খুললে। (আবির মনে মনে)
আবির নীলাকে কোলে তুলে নিলো এবং খাটে শুয়ে দিচ্ছে।
নিলা : আরে আরে! করছেনটা কি! পরে যাবো তো।
আবির : চুপ!! ভাবী আছে দরজার পাশে।
আবির গিয়ে দরজা খুললো।
ভাবী : আবির ঘুম হয়েছে?
আবির : জি ভাবী।
ভাবী : তাহলে এবার রুম থেকে বের হো।
আবির : কেন?
ভাবী : তোর বউকে সাজাবো বলে।

চলবে…… ?

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে